গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, খাদ্য-বিশুদ্ধ পানির সংকট
১৯ জুলাই ২০১৯ ১১:০০
গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। বন্যা কবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। ২১ বছর পর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে গাইবান্ধা শহর।
শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকালে গাইবান্ধার ফুলছড়ি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৫০ সেন্টিমিটার ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে এবারের পানির উচ্চতাও। এছাড়া বাদিয়াখাল-ত্রিমোহিনী এলাকায় রেললাইন ডুবে যাওয়ায় বুধবার থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের চার জেলার সব ধরনের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এদিকে বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদি পশুর। বন্যা কবলিত এলাকায় ডুবে আছে ফসলি জমি। ভেঙ্গে গেছে রাস্তাঘাট এবং ব্রিজ-কালভাট। ভেসে গেছে পুকুর ও মৎস্য প্রকল্পের মাছ। বন্যায় ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় মানুষ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, রেললাইনের পাশে, বিভিন্ন সড়ক ও আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যা কবলিতদের মধ্যে অনেককেই খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হচ্ছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বানভাসী মানুষজন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সাদুল্লাপুর উপজেলার ৪৮টি ইউনিয়নের দুইটি পৌরসভা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪ লাখ ১২ হাজার মানুষ, ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৯ হাজার ১৪২টি। কাঁচা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫১৭ কিলোমিটার ও বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৭ দশমিক ৫০ কিলোমিটার। বন্যার পানিতে কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৮টি, ডুবে রয়েছে ৯ হাজার ৮২১ হেক্টর ফসলি জমি ও ভেসে গেছে ২৯৪১টি পুকুরের মাছ। তাছাড়া গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা, গোবিন্দগঞ্জ ও সাদুল্লাপুর উপজেলায় ৩০৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে চারটি বিদ্যালয় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ২৬৪০টি টিউবওয়েল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যা কবলিতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে ১৬৬টি। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ৭১ হাজার ২৪ জন। পাশাপাশি, বন্যার্তদের মধ্যে ত্রান বিতরণ করছে জেলা প্রশাসন।
সারাবাংলা/ওএম