শাহজালালে নিরাপত্তা দেবে জার্মান শেফার্ড, ল্যাব্রাডর
১৯ জুলাই ২০১৯ ১৪:৫৮
ঢাকা: হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় এখন থেকে কাজ করবে ডগ স্কোয়াড। ২ বছর আগে ইংল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে জার্মান শেফার্ড, ল্যাব্রাডর এবং বেলজিয়াম মেলানিয়াস নামের কুকুর। দীর্ঘদিনের প্রশিক্ষণ শেষে তাদেরকে এখন স্কোয়াডে যুক্ত করা হচ্ছে। বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এর সঙ্গে কাজ করবে ডগ স্কোয়াডটি।
২০১০ সালের ১ জুনে প্রায় ১ হাজার আর্মড পুলিশ নিয়ে গঠিত হয় বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। ২৪ ঘণ্টার শিফটে কাজ করছে এপিবিএন। এতে শাহজালালে বন্ধ হয়েছে চুরি, ছিনতাই, ভিক্ষুক ও মলম পার্টির দৌরাত্ম। এরই ধারাবাহিকতায় শাহজালালের নিরাপত্তায় এবার যুক্ত হলো ৮ সদস্যের ডগ স্কোয়াড।
জানা গেছে, প্রায় ২ বছর আগে ইংল্যান্ড থেকে আটটি কুকুর আনে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ। পর্যায়ক্রমে আরও ৮টি কুকুর আনা হবে। এখন ৮টি কুকুরের মধ্যে ৪টি কাজ করছে। ফলে আরও ৮টি কুকুর আনা হলে তখন ১৬ সদস্যের একটি ডগ স্কোয়াড হবে শাহজালালে।
২ বছর আগের আনা কুকুরগুলো বিমানবন্দরের প্রবেশ-বাহির পথে তল্লাশি ছাড়াও মাদক-বিস্ফোরক শনাক্তে বিশেষভাবে কাজ করবে। ইংল্যান্ড থেকে আমদানি করা জার্মান শেফার্ড ও ল্যাব্রাডর এবং বেলজিয়াম মেলানিয়াস জাতের আটটি কুকুরকে আমেরিকান দূতাবাসের সহযোগিতায় দীর্ঘ দেড় বছর ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এ ডগ স্কোয়াডের টিমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে আর্মড পুলিশের ১৮ সদস্যকেও। যাদের বলা হয় ডগ হ্যান্ডলার। ফলে এখানে আমেরিকান দূতাবাস এপিবিএনকে বিশেষভাবে সহায়তা করেছে। এছাড়া কুকুরগুলোর বিস্ফোরক ও মাদকের ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা সফলও হয়েছে। পাশাপাশি এক্সক্লুসিভ বিষয়েও টহল করানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, নিরাপত্তার স্বার্থে সম্প্রতি দেশের সব বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য একটি প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন নামে একটি প্রকল্প চলতি বছরের (১৮ মে) একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দেন। সভায় জানানো হয় বাংলাদেশে ৩টি আন্তর্জাতিক ও ৬টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। দেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিমানবন্দরগুলোর ব্যস্ততাও দিন দিন বাড়ছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় এসব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।
এদিকে অনুমোদিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ অর্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে খরচ করা হবে।
কুকুরগুলোর বিষয়ে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আলমগীর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা প্রায় ২ বছর আগে থেকে কুকুরগুলোর প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছি। আমরা বাচ্চা ডগ এনছিলাম। এগুলো এনে দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মিলিয়ে ট্রেনিং করানো হয়েছে। আমেরিকান অ্যাম্বেসি বিশেষভাবে আমাদের সহায়তা করেছে। ৮টির মধ্যে ৪টি পুরোপুরি ডিউটি করছে। বিষ্ফোরক ও মাদকের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে কুকুরগুলোকে। বিভিন্ন টেস্টে তারা সফলও হয়েছে। সবগুলো কুকুর ইংল্যান্ড থেকে আনা।’
তিনি আরও বলেন, কুকুরগুলোর নামে পাসপোর্টও করা হয়েছে। পুলিশ ডগ নামে পাসপোর্ট। আমরা ২০১০ সালের ১ জুন থেকে বিমানবন্দরে কাজ করছি। তখন জনবলের সংখ্যা ছিলো প্রায় ১ হাজার। বর্তমানে ১ হাজারের মতো জনবল আছে। থার্ড টার্মিনাল হলে আরও ৫শ জনবল লাগবে। সেগুলো হলে আমরা আরও ভালভাবে কাজ করতে পারব।
সারাবাংলা/এসজে/জেএএম