Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডেঙ্গুর চিকিৎসায় শহরমুখী রোগী


২০ জুলাই ২০১৯ ০৯:০১

ঢাকা: বর্তমানে ডেঙ্গু রোগ মহামারী আকার ধারণ করেছে। রাজধানীর এই আতঙ্ক পার্শ্ববর্তী জেলা-উপজেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। সামান্য জ্বর হলেও তাই রোগীরা ছুটে আসছেন রাজধানীতে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, গ্রামের হাসপাতাল/ক্লিনিকে এর চিকিৎসা পাওয়া যায় না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডাক্তার, ওষুধ, মেডিকেল চেক-আপ নেই। যার কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য তারা শহরের হাসপাতালে আসছেন।

স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, যেসব রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা। কম খরচ ও উন্নত চিকিৎসার পাওয়ার আশাতেই তারা রাজধানীতে ছুটে এসেছেন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারজানা জানান, এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগী তুলনামূলক অনেক কম আসেন। যারা আসেন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মিটফোর্ড হাসপাতালে ট্রান্সফার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু যদি পজিটিভ দেখা যায় তাহলে আমরা প্রথমে চিকিৎসা দেই। যদি আমাদের সাধ্যের বাইরে চলে যায়, তখন আর রোগীকে আর রাখি না। তাড়াছা এখানে প্যথোলজির বিষয়টিও নেই। তাই এসব বিষয়ে চিকিৎসাও দেওয়া যায় না।’

মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ চুনকুটিয়া এলাকা থেকে এসেছেন ফারুক আহমেদ (৫৫)। তিনি সারাবাংলাকে জানান, চুনকুটিয়া এলাকায় ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার জন্য ভাল কোনো হাসপাতাল নেই। যার কারণে ঢাকার মিটফোর্ডে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। এখানে চিকিৎসা ভালোই হচ্ছে।

মিটফোর্ড হাসপাতালের অবজারভেশনের ডা. শাহজাহান সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিদিন ২০/২৫ জন করে ডেঙ্গু রোগী এখানে আসছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অনেকেই সুস্থ হচ্ছেন, আবার কাউকে সঙ্গে সঙ্গে ভর্তি করে নেওয়া হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের চেয়ে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এখন বেড়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মিটফোর্ড হাসপাতালের-৩ ইউনিটের চিকিৎসক আহসান হাবিব সারাবাংলাকে বলেন, ‘এখানে যে কয়জন রোগী এসেছেন তাদের আমরা সাধ্যমত চিকিৎসা দিচ্ছি। তবে যে ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা অনেক জটিল তাদের আমরা সঙ্গে সঙ্গে জরুরি বিভাগে পাঠিয়ে দিচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ ডেঙ্গু রোগীকে খাবার স্যালাইন ও নাপা ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীর যদি মাথায় রক্তক্ষরণ হয় তাহলে তাকে বাঁচানো অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।’

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বেসরকারি কয়েকটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ঘুরে দেখা গেছে, ডেঙ্গুর অধিকাংশ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে, মিটফোর্ড, ঢাকা মেডিকেল, বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ট্রান্সফার করে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে বেসরকারি হাসপাতাল ‘আল বারাকা মডেল হাসপাতালে’র ইনচার্জ আল আমিন হোসেন বলেন, ‘এখানে প্রতিদিন খোনামোড়া, চুনকুটিয়া, কোনাখোলা এলাকায় থেকে ডেঙ্গুর চিকিৎসার জন্য রোগীরা আসছেন। আমরা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেই, যদি রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হয়, তাহলে মিটফোর্ড, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্টোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার সারাবাংলাকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছে ৫ হাজার ৫৪৬ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ১ হাজার ২০৭ জন। আর ছাড়পত্র পাওয়া রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৩৩৪ জন। এখন পর্যন্ত এ বছর ৫ জন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘৩৬টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত এসব হাসপাতালে রোগী ভর্তি হয়েছে ২ হাজার ৯৫৫ জন। বর্তমানে ভর্তি আছেন ৫০৪ জন। আর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৪৪৬ জনকে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডিরেক্টর পরিচালক অধ্যাপক ডা. সোনিয়া তাহমিনা বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৮টি সরকারি, বেসরকারি হাসপাতাল ও দুই সিটি করপোরেশনের সর্বমোট ১ হাজার ৫০০ জনকে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া ব্যবস্থাপনায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিট দেওয়া হয়েছে। সব চিকিৎসকের কাছে ডেঙ্গু শনাক্তকরণ গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সারাবাংলা/এআই/এমও

টপ নিউজ ডেঙ্গু ডেঙ্গু রোগী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৫০

সম্পর্কিত খবর