Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গণপিটুনিতে নিহত নারীর পরিচয় প্রকাশ


২১ জুলাই ২০১৯ ০১:৩৫

রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তার নাম তাসলিমা বেগম রেনু (৪০)।

শনিবার (২০ জুলাই) রাতে নিহতের ভাগ্নে সৈয়দ নাসির উদ্দিন টিটু ও অন্য স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) জরুরী বিভাগের মর্গে গিয়ে মরদেহটি শনাক্ত করেন।

ভাগ্নে টিটু জানান, মেয়েকে ভর্তির খোঁজ খবর নিতে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন খালা। এক মেয়েকে নিয়ে ৩৩/৩ জিপি/জ মহাখালী বড় বোন জয়নব বেগমের কাছে থাকতেন। এর আগে, তার দুই সন্তান নিয়ে উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক স্কুলের পাশে আলী মোড় এলাকায় স্বামী তসলিম হোসেনের সঙ্গে থাকতেন।

টিটু আরো জানায়, আড়াই বছর আগে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহের কারণে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে তিনি চার বছরের মেয়ে তাসনিম তুবুকে নিয়ে মহাখালীতে থাকতেন। বড় ছেলেকে নিয়ে বাবা অন্য জায়গায় চলে যায়। প্রতিদিন ফজর নামাজ পরে হাটতে বের হতেন তিনি। আজও ভোর বেলা হাটতে বের হন। মেয়ের জন্য উত্তর বাড্ডায় স্কুলে ভর্তির খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন। তারপর দুপুর পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

টিটু বলেন, আমার খালাকে ঐ স্কুল মাঠেই নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। একটা লোকও কি ছিল না আমার খালাকে বাচানোর? এ ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি। পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমি বিচার চাই।

বড় বোন রেহানা আক্তার জানায়, স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর থেকে বিষন্নতায় ভুগতো। মেয়েকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকতো। কেন আমার বোনটাকে ওরা মেরে ফেলল। যারা আমার নিরাপরাধ বোনটাকে মেরে ফেলেছে তাদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত রেনুর আত্মা শান্তি পাবে না। গল্পে শুনেছি ছেলেধরা আছে। আজ সেই ছেলে ধরা সন্দেহে আমার বোনকে মরতে হলো।

বিজ্ঞাপন

এর আগে শনিবার (২০ জুলাই) সকাল পৌনে ৯টার দিকে উত্তর বাড্ডা প্রাথমিক সরকারী বিদ্যালয় মাঠে ছেলেধরা সন্দেহে এক নারীকে পিটিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত নারী উত্তর বাড্ডায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।

বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিকভাবে স্বজনরা রেনুকে শনাক্ত করেন। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহটি মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার নম্বর ৩০। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। মহিলাটি খুব মানসিক ভাবে বিষণ্ন ছিল।

ওসি আরও বলেন, জীবনে কখনো ছেলেধরা দেখিনি আমরা ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহের কাজ করছি। গণপিটুনিতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। শনাক্ত করা গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন কারো হাতে তুলে নেওয়ার এখতিয়ার নাই।

সারাবাংলা/এসএসআর/টিএস

ছেলেধরা বাড্ডায় গণপিটুনি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:৫০

সম্পর্কিত খবর