ছাত্রলীগের সম্মেলনে কর্মীর মৃত্যু, দায় কার?
২১ জুলাই ২০১৯ ০২:৩৫
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে এক কর্মীর মৃত্যুতে মর্মাহত হয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীরা। প্রচন্ড গরমেও সকাল থেকে তারা স্লোগানে কম্পিত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। এতে শেষ পযর্ন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতে বাধ্য হয় এক কর্মী।
প্রশ্ন উঠেছে, এই মৃত্যুর জন্য দায়ী কে? ছাত্রলীগের সম্মেলন যথা সময়ে শুরু হলে কি এমন ঘটনা ঘটতো? সম্মেলন বিকেলে দিলে কি হতো? এমন অনেক প্রশ্ন তুলছেন বর্তমান ও সাবেক নেতাকর্মীরা।
ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা বলছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যথাসময়ে সম্মেলন শুরু করলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন নেতাকর্মীরা।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আসার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে ক্যাম্পাসে আসে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আওয়ামীলীগের ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা দীর্ঘক্ষণ জবি উপাচার্য়ের কনফারেন্সরুমে বসে ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গেলে আসাদুজ্জামান খান কামাল বক্তব্যের শুরুতে বলেন, আমি তো সময় মতো এসেছিলাম কিন্তু শোভন-রব্বানী দেরী করেছে।
প্রত্যাক্ষদর্শী ছাত্রলীগ কর্মীরা জানান, সকাল ১১টার সম্মেলন শুরু হয় বিকেল তিনটায়। প্রচণ্ড গরমেও সকাল থেকে স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ফলে টানা ৭-৮ ঘণ্টার গরম সহ্য করতে না পেরে অসুস্থ হয়ে ওয়াসি সহ বেশ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী। সঙ্গে-সঙ্গেই ওয়াসিকে জবি ক্যাম্পাসের পাশেই ন্যাশনাল মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং অন্যন্য কর্মীদের চিকিৎসা প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, এই বিষয়টা অনেক পীড়াদায়ক। সম্মেলন যথা সময়ে শুরু করতে না পারা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও সভাপতির ব্যর্থতা। তারা যদি যথা সময়ে সম্মেলন শুরু করতেন তাহলে হয়তো এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারত।
তিনি আরো বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমনিতে জায়গার সংকট। প্রচন্ড গরমের কথা বিবেচনা করে তাদের আরো আগে আসা উচিত ছিল। আশা করি এরপর থেকে তারা দায়িত্বশীল হবেন।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাহিত্য সম্পাদক মো. সাফায়েতুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোন সম্মেলনে গেয়ে যথা সময়ে গিয়ে সম্মেলন শেষ করেন। তারাও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতা হওয়ায় তাদেরও সময়ের কাজ সময়ে করা উত্তম। আমি শুনেছি, তারা সাড়ে তিন ঘন্টা পরে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, তারা যদি যথা সময়ে সম্মেলন শুরু করতে নাই পারবে তাহলে একদিন আগে ঘোষণা দিলেই হত। দায়িত্বহীনতার পরিচয় না দিলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারত।
উল্লেখ্য, প্রেমঘটিত বিষয়ে সংঘর্ষের জেরে জবির তরিকুল-রাসেল কমিটি ১৯ ফেব্রুয়ারি কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটি বিলুপ্তির প্রায় ৬ মাস পরে সম্মেলন হয়েছে। শনিবার (২০ জুলাই) ছাত্রলীগের সম্মেলন চলাকালে অসুস্থ হয়ে সুলতান মো. ওয়াসি নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইংরেজি বিভাগে ১১তম ব্যাচের ২০১৫-২০১৬ সেশনের শিক্ষার্থী।
সারাবাংলা/জেআর/টিএস