সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের এখতিয়ার ঢাবির নেই: উপ-উপাচার্য
২১ জুলাই ২০১৯ ১৯:১২
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করার এখতিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নেই বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক. ড মুহাম্মদ সামাদ। রোববার (২০ জুলাই) বিকেল ৫টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান।
উপ-উপাচার্য অধিভুক্তি বাতিল বিষয়ে বলেন, আমাদের উপাচার্য স্যার দেশে নেই। আমরা তো হুট করে একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। আর সাত কলেজের অধিভুক্ত বাতিল হওয়া না হওয়ার বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই। এটা জাতীয় বিষয়। এই সিদ্ধান্ত তো সরকারি সিদ্ধান্ত। এটা বাতিল করার এখতিয়ার বা ক্ষমতা আমাদের কাছে নেই।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও তার সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার সদিচ্ছা হচ্ছে শিক্ষার মান বাড়ানো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ সকলে মিলে শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য চিন্তা করছি। সেই চিন্তার সাথে আমরা সহমত পোষণ করি। তাই সেই মান বাড়ানোর লক্ষ্যে যখন আমরা এই কলেজগুলো নিয়েছি, সেটা আমাদের শিক্ষার্থীদের যে যৌক্তিক দাবিগুলো আছে, তাদের কোনো শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ব্যর্থ না হয়, বিশ্ববিদ্যালয় যাতে ঠিকমতো চলে, সেগুলো অক্ষুণ্ণ রেখে আমরা এই কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করবো।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের যেসব দাবি যৌক্তিক সেগুলো মানা হবে। আমরা তার উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা তো পিছিয়ে যাচ্ছি না, এগোচ্ছি।
আরও পড়ুন: সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাবিতে তালা
সংবাদ সম্মেলনে সাত কলেজের সমন্বয়ক অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, সাত কলেজ সংক্রান্ত আমাদের কাছে যে প্রশ্নগুলো এসছিল সেগুলো সংগ্রহ করে আমরা দেখলাম অনেক তথ্য পরিবর্তন হয়েছে। যেগুলো অনেকেই জানে না। যেমন- কেউ কেউ বলছিলেন সার্টিফিকেটের বিষয়ে। সার্টিফিকেট তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের ভিন্ন। তারপর আমাদের প্রশ্ন করা হলো সমাবর্তনের বিষয়ে। সমাবর্তনও আলাদা জায়গায় হয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়ার বিষয়ে তো তারা আমাদের এখানে আসে না। তাদের পরীক্ষার খাতাও ৯০ শতাংশ তাদের কলেজের শিক্ষক দিয়ে মূল্যায়ন করা হয়। মাত্র ১০ শতাংশ খাতা আমাদের এখানে মূল্যায়ন করা হয়। এসময়, সাত কলেজের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পাঁচ হাজার বর্গফুটের মধ্যে আলাদা ভবন নির্মাণের কথাও জানান তিনি।
এর আগে, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের করা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত নিতে ডাকসু’র প্রতিনিধিবৃন্দ ও বিভিন্ন বিভাগের ডিনদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন উপ-উপাচার্য। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন ও ঢাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম, চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া, ডাকসু’র ভিপি নুরুল হক নুর, জিএস গোলাম রাব্বানী, এজিএস সাদ্দাম হোসেন ও ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে আসলেও আজ কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের ‘এক দফা দাবি’তে আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনে তালা মেরে দিয়ে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রকার অচল হয়ে পড়ে। পরে দুপুর দুইটার দিকে আগামীকাল থেকে আবার লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে আন্দোলন স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।
সারাবাংলা/কেকে/এনএইচ