Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যেভাবে দুই নারী জড়িয়ে পড়েন ৫ বিদেশি ফুটবলারের জালে


৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:০৮

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : প্রতারণার অভিযোগে ৫ বিদেশি ফুটবলারকে গ্রেফতার করেছে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। ওই পাঁচ বিদেশি ফুটবলারকে সহায়তা করেছেন বাংলাদেশের দুইজন। তাদের দুইজনকেও গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

গ্রেফতার হওয়া পাঁচ নাইজেরিয়ান ফুটবলার হলেন, ওগোখোয়া ওনোচি (৩২), মরিস (৩৪), ওবিনা (৩৫), হ্যানরি ওরফে শর্ট হ্যানরি (২৪) ও এন্থনি কেজিতো অ্যারেঞ্জি (২৬)। দুই বাংলাদেশি হলেন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার কাউসার আহমেদ ও অ্যাকাউন্ট সংগ্রহকারী রাইসুল ইসলাম আসাদ। এরা প্রতারণার মাধ্যমে পাওয়া অর্থ থেকে পাঁচ শতাংশ হারে কমিশন পেতেন।

সোমবার দুপুর ১২টায় সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মোল্লা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পাঁচ নাইজেরিয়ান ফুটবলার এক সময় ফেনী সকার ক্লাবে খেলেছেন। এরপর তাদের দুজন মোহামেডান ক্লাবে খেলেছেন। এদের একজন পরবর্তীতে আবাহনীতেও খেলেছেন বলে তারা সিআইডির কাছে দাবি করেছেন। তাদের প্রত্যেকের পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

মোল্লা নজরুল ইসলাম বলেন, নাইজেরিয়ান এই প্রতারক চক্রটি নাদিরা আক্তার নামে এক চিত্রশিল্পীকে ফেসবুকে বন্ধুত্বের সুবাদে কিছু ছবি চায়। যে ছবিগুলো ইংল্যান্ডে একটি চিত্র প্রতিযোগিতায় পাঠানোর কথা বলে। পরবর্তীতে নাদিরাকে ফোন করে ইংল্যান্ডের ওই চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার একজন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বলেন, তোমার ছবিটা পুরস্কার পেয়েছো। তোমার পুরস্কার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে শামীমা রহমান নামে একজন কাস্টমস কর্মকর্তা সেজে নাদিরাকে ফোন করে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে আপনার নামে একটি পার্সেল এসেছে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পার্সেলটিতে তিন লাখ পাউন্ড আছে মর্মে পার্সেলটি আটকে দিয়েছে। পার্সেলটি যেকোনো উপায়ে ছাড়িয়ে নিতে বলেন নাদিরাকে। প্রয়োজনে টাকা খরচ করার জন্যও অনুরোধ করেন।

বিজ্ঞাপন

দফায় দফায় থমাস কিং নামে একজন ও শামীমা রহমান তাকে ফোন দিয়ে পার্সেলটি ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য টাকা দিতে বললে, সরল বিশ্বাসে তাদের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রথমে দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা পাঠান। এরপর আরো টাকা লাগবে জানালে আরেকটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দুই লাখ টাকা পাঠান। এরপরেও পার্সেলটি নাদিরা হাতে না পাওয়ায় তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, আরো টাকা লাগবে। এতোবড় উপহার এতো অল্প টাকায় ছাড়ানো সম্ভব নয়। এমনকি তারা বলেন, অবৈধ উপায়ে পার্সেলটি আনার বিষয়ে মামলায় ফেঁসে যেতে পারেন বলে ভয় দেখান নাদিরাকে। নাদিরা আক্তার মামলার ভয়ে ও তিন লাখ পাউন্ড পুরস্কারের লোভে বিভিন্ন সময় ১৯টি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এক কোটি এক লাখ আটানব্বই হাজার ৪০০ টাকা পাঠান। তারপরও পার্সেলের কোনো খোঁজ না পেয়ে থমাস কিং ও শামীমা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায় পার্সেলটি দিতে পারবে না তারা। তাদের সাথে যোগাযোগও করতে মানা করেন তারা। যোগাযোগ করলে পরিণাম খারাপ হবে বলে হুমকি দেন তারা। এরপর বড় ধরনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে নাদিরা আক্তার বনানী থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় সিআইডি গত দুই ফেব্রুয়ারি বসুন্ধরা ও খিলক্ষেত এলাকা থেকে ৫ নাইজেরিয়ান ও দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মোল্লা নজরুল বলেন, নাদিরা আক্তার একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী। আরও একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের স্ত্রী তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন বলে তাদের কাছে অভিযোগ আছে। গ্রেফতাররা স্বীকার করেছেন তারা নিদেজের ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান বলে পরিচয় দিয়ে ইউরোপিয়ান ও আমেরিকান নাগরিকদের ছবি ফেসবুক প্রোফাইলে ব্যবহার করে ভিকটিমের সাথে প্রথমে বন্ধুত্ব তৈরি করে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তারা নানা উপায়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন।

বিজ্ঞাপন

আরেক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, ১২ জন বাংলাদেশির ১৯ টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা। এসব অ্যাকাউন্টে টাকা লেনদেন করা হয়েছে। বিদেশে পাচার করা হয়েছে টাকা। তাদের সবার বিরুদ্ধে নতুন করে মানি লন্ডারিং মামলা দিয়ে গ্রেফতার দেখানো হবে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

 

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

উর্মিলার সংসার ভেঙে যাওয়ার কারণ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:০২

নতুন পরিচয়ে কুসুম সিকদার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৫৭

সম্পর্কিত খবর