সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী
২২ জুলাই ২০১৯ ১৯:৪৪
ঢাকা: সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। সর্বশেষ গত জুন মাস থেকে ২২ জুলাই (সোমবার) পর্যন্ত দেড় শতাধিক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ১৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এদের মধ্যে দু’জন আইসিইউতে, ১২ জন সাধারণ ওয়ার্ডে এবং ৫ জন কেবিনে রয়েছেন। গত কয়েকদিন রোগী আসার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নতুন করে আরও ৫টি বেড বাড়ানো হয়েছে হাসপাতালে।
সোমবার (২২ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর ফুলবাড়ীয়ায় অবস্থিত সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে ভর্তি হতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় করছেন অসংখ্য ডেঙ্গু রোগী। কিন্তু রোগীর তুলনায় বেডের সংখ্যা কম থাকায় অনেকে বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তাদের একজন শামসুন নাহার। তিনি তার ছেলেকে নিয়ে রাজধানীর লালবাগ থেকে নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে সিট না পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে চলে যাচ্ছেন বলে সারাবাংলাকে জানান তিনি।
অন্যদিকে, গত জুন মাস থেকে এখন পর্যন্ত দেড় শতাধিক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তাদের মধ্যে ওয়ার্ডে ৫২ জন, কেবিনে ৩৭ জন এবং ২৪ জন আইসিইউ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এদিকে, চলতি মাসের জুলাই থেকে ডেঙ্গু রোগী ভর্তির পরিমাণ বেড়েছে বলে জানা গেছে। জুলাই মাসে প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তির জন্য আসছেন। তবে সবাইকে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না বলেও জানা গেছে।
এছাড়া চলতি জুন-জুলাই মাসে সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল থেকে প্রায় দেড় শতাধিক ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন এবং অনেকে এখনো ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের অনেকেই কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
রোগীদের অভিযোগ, হাসপাতালে ডেঙ্গুসহ যাবতীয় রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সুযোগ রয়েছে। তারপরও ডাক্তার-কর্মচারী মিলে রোগীদের পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার অথবা ইবনে সিনা হাসপাতাল থেকে টেস্ট করতে বাধ্য করছেন। তবে এই অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন ও উপপরিচালক ডা. শাহ আলম।
সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) ডা. এ বি এম শরীফ উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে দেশে বার্নিং ইস্যু হচ্ছে ডেঙ্গু। সারাদেশেই কম বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমাদের হাসপাতালে প্রচুর ডেঙ্গু রোগী আসছে। এদের মধ্যে যারা বেশি সিরিয়াস তাদেরকে আমরা ওয়ার্ড থেকে আইসিইউতে নিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছি।’
ড. শরীফ উদ্দিন আরও বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর জন্য যতক্ষণ বেড খালি থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রোগী ভর্তি করে থাকি। বেড খালি না থাকলে আমাদের ইচ্ছা থাকার পরও রোগী ভর্তি করা যায় না।’
হাসপাতালের ডেপুটি ডাইরেক্টর (ডিডি) ডা. শাহ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু রোগীদের সাধারণত আমরা মেডিসিন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেই। এখানে ৩০টি বেড আছে। বর্তমানে ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায়, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আরো ৫টি বেড বাড়ানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে নাক-কান-গলা বিভাগের ৫টি বেড শুধু ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।’
২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৪০৩ ডেঙ্গু রোগী, ভেঙেছে রেকর্ড
ডা. শাহ আলম বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু, টাইফয়েড ও ম্যালোরিয়া রোগী বেশি আসছে। এইসব রোগীর প্রায় সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এখানে করা হচ্ছে। কোনো ডাক্তার কিংবা কর্মচারী যদি রোগীকে বাইরে থেকে টেস্ট করাতে উৎসাহিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এই ধরনের অভিযোগের বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/জিএস/এমও