Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বোঝাই যাচ্ছে না ডেঙ্গু’


২৩ জুলাই ২০১৯ ১০:০৬

ঢাকা: তাজভীর, বয়স দুই বছর ১০ মাস। এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই বমি শুরু হয় শিশুটির। সঙ্গে অল্প জ্বর ও পেট ব্যথা। সাপোজিটর দেওয়ার পরেও ক্রমাগত বমি করতে থাকে শিশুটি। হাসপাতালে নিয়ে টেস্ট করানোর পর ডেঙ্গু ধরা পড়ে শিশুটির। প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে তাজভীর ৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরও অবস্থার উন্নতি না দেখে তাকে দ্রুত শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনিসেনটিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে তাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন চব্বিশ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

বিজ্ঞাপন

অথচ শুরুতে ডেঙ্গুর বিষয়টি বোঝাই যায়নি বলে জানান শিশুর বাবা-মা। তাজভীরের মা বলেন, ‘প্রথম অবস্থায় তাজভীরের খুবই হালকা জ্বর ছিলো। বমি ছাড়া ডেঙ্গুর আর কোনো লক্ষণ দেখা দেয়নি, গায়েও কোন র‍্যাশও উঠেনি। টেস্টের জন্য ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার সময়ও সে স্বাভাবিক ছিলো। বোঝা যায়নি ওর ডেঙ্গু হয়েছে।’

তাজভীরের পাশের বেডেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে সাড়ে চার বছরের শিশু রুম্মান। গত সোমবার হঠাৎ করেই তীব্র জ্বর দেখা দেয় রুম্মানের। সেই সঙ্গে শুরু হয় তিন-চার মিনিট ধরে খিঁচুনি। দ্রুত গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে টেস্ট করানোর পর ডেঙ্গু ধরা পড়ে শিশুটির। সেখানে ভর্তি করানোর পর অবস্থার উন্নতি না দেখে রুম্মানকে শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার মা-বাবা।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত এমন অনেক শিশুই চিকিৎসাধীন রয়েছে ঢাকা শিশু হাসপাতালে। অধিকাংশ অভিভাবকই বলছেন, এবার লক্ষণ দেখে শুরুতেই বোঝা যাচ্ছে না ডেঙ্গু হয়েছে। প্রথমে সাধারণ জ্বর বলেই মনে হয়। গায়ে কোনো র‌্যাশও দেখা যায় না।

ঢাকা শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ২২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে ৬১ জন শিশু। আর বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তিনটি শিশুকে।

জানা গেছে, প্রতিদিনই অনেক শিশুকে অসুস্থ অবস্থায় ডেঙ্গু টেস্ট করানোর জন্য নিয়ে আসা হচ্ছে এখানে। এদের মধ্যে অনেককে বহির্বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, আবার অনেক শিশুকে আক্রান্ত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে।

ডেঙ্গুর গতানুগতিক লক্ষণের থেকে এবারের লক্ষণগুলো ব্যতিক্রম বলেই জানালেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ শফী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘আগে ডেঙ্গুর লক্ষণ ছিলো জ্বর আর মাথাব্যথা। চোখের পেছনে ব্যথা হতো, গায়ে র‍্যাশ দেখা দিত। তবে এবারের লক্ষণগুলো অন্যরকম। এবারে কারও তীব্র পেটব্যথা হচ্ছে, কারও হার্টের সমস্যা বেড়েছে। কারও ব্রেইনে এফেক্ট করছে, লিভার বড় হয়ে যাচ্ছে বা পানি জমে যাচ্ছে। অন্যান্য বছরের চাইতে এবারে এই জটিলতাগুলো অনেক বেশি। তাই অভিভাবকরা বুঝে ওঠার আগেই অনেকসময় ডেঙ্গু আক্রান্ত বাচ্চাগুলোর অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৪০৩ ডেঙ্গু রোগী, ভেঙেছে রেকর্ড

তবে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকদের বিচলিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বলছেন, তরল খাবার ও প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের দিতে হবে। রক্তের প্রয়োজন হলে দ্রুত ব্যবস্থা করতে হবে।

আরও পড়ুন:
সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে বেড়েছে ডেঙ্গু রোগী
‘মশা মারতেও আমাদের রুল দিতে হয়, বিশ্বে এমন নজির নেই’

সারাবাংলা/ওএম/এমও

ডেঙ্গু জ্বর ঢাকা শিশু হাসপাতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর