হৃদয়সহ ১০-১৫ জন তালা ভেঙে রেনুকে বাইরে আনে
২৪ জুলাই ২০১৯ ১৬:১৭
ঢাকা: রাজধানীর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার প্রধান আসামি হৃদয় জানিয়েছে যে, সেসহ আরও ১০-১৫ জন দরজার তালা ভেঙে ওই মহিলাকে বাইরে বের করে আনে। এরপর তারা ওই মহিলাকে মারধর করে এবং এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় পুলিশের কাছে এসব তথ্য দিয়েছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘হৃদয়ের বাবা মা নেই। সে ওই এলাকার সবজি বিক্রেতা। ঘটনার দিন ওই স্কুলের পাশে সবজি বিক্রি করছিল সে। সেদিন রেনু ওই স্কুলে তার সন্তানকে ভর্তির ব্যাপারে তথ্য নিতে গিয়েছিলেন। এ সময় এক অভিভাবক তার পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। এতে রেনু বেগম একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। পরে ওই অভিভাবকের তাকে ছেলেধরা বলে সম্বোধন করে। হৃদয় একথা শুনে সবজি বিক্রি রেখে সেখানে ছুটে আসে। দেখতে দেখতে স্কুল এলাকায় ১৫/২০ জনের একটা জটলা তৈরি হয়। ‘
ডিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এক পর্যায়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভিকটিম রেনুকে তাদের স্কুলের একটি রুমে নিয়ে তালা দিয়ে করে রাখে। এক পর্যায়ে ছোট জটলাটি বড় আকার ধারণ করে এবং ছেলেধরা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ১০-১৫ জনের একটি দল স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে এবং তালা ভেঙে ওই মহিলাকে বাইরে বের করে নিয়ে এসে মারতে থাকে। এতে ঘটনাস্থলেই রেনুর মৃত্যু হয়।’
তিনি বলেন, ‘হৃদয় প্রাথমিকভাবে ৭/৮ জনের নাম বলেছে, যারা কিনা তালা ভেঙে ওই মহিলাকে স্কুল থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল। আমরা তদন্ত ও তাদেরকে গ্রেফতারের স্বার্থে নাম পরিচয় প্রকাশ করছি না। যে অভিভাবক ছেলেধরা বলে সম্বোধন করেছিল তার বিষয়ে আমরা খোঁজখবর করছি এবং বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
এই ঘটনার পরে হৃদয় যখন বুঝতে পারে পুলিশ তাকে খুঁজছে তখন সে নারায়ণগঞ্জের ভুলতায় পালিয়ে যায় এবং গ্রেফতার এড়াতে সে তার মাথার চুল ফেলে দেয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান আব্দুল বাতেন।
তিনি আরও বলেন, ‘হৃদয় ঢাকায় তার নানির সঙ্গে থাকত। সে তার নানিকে বলে যে, আমার যে জামা কাপড়গুলো আছে সেগুলো পুড়িয়ে দিতে। আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হৃদয়কে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে গ্রেফতার করি। এছাড়া তার ব্যবহৃত কাপড়ও উদ্ধার করা হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল কিনা তা এখনও সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাচ্ছে না। আর পুলিশ ৪০ মিনিট পর ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এই তথ্যটি সঠিক নয়। পুলিশ ঘটনার সময় পাশেই ছিল। ঘটনার পর পরই তারা সেখানে উপস্থিত হয় এবং তাদেরকে নিবৃত করার চেষ্টা করে। কিন্তু হাজার হাজার লোককে ৪/৫ জন পুলিশের পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।’
সারাবাংলা/ইউজে/পিটিএম