গুজব ঠেকাতে শিক্ষক-জনপ্রতিনিধিদের পাশে চান চট্টগ্রামের এসপি
২৫ জুলাই ২০১৯ ১৮:৪৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছেলেধরা গুজব ঠেকাতে শিক্ষা ও স্থানীয় সরকার বিভাগকে পাশে চেয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) নুরে আলম মিনা। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষক এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের গুজব প্রতিরোধের যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি গুজব রটিয়ে গণপিটুনি দিয়ে কয়েকজনকে হত্যার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানিয়েছেন এসপি। এসময় তিনি ছেলেধরা গুজব ঠেকাতে পুরো জেলায় পুলিশের বিভিন্ন প্রচারণা এবং পদক্ষেপের বর্ণনা দেন তিনি।
এসপি বলেন, ‘আমাদের পাশাপাশি আরও অনেকগুলো সংস্থার কাজ করা দরকার। আমরা আহবান জানাচ্ছি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে এগিয়ে আসার জন্য। তাদের কাছে একটি বড় দায়িত্ব আছে। তাদের যেসব কর্মকর্তা আছে তারা শিক্ষকদের নির্দেশনা দেবেন শিক্ষার্থীরা যেন ভয় না পেয়ে ক্লাসে আসে। আমরা (পুলিশ) এগিয়ে এসেছি তারাও যেন এগিয়ে আসে আমাদের সঙ্গে।’
শিক্ষা বিভাগের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে এসপি বলেন, ‘এ বিভাগটি বড় স্টেক হোল্ডার। তাদের স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশ এলাকার সবাইকে চেনে। তাদের এলাকায় কে আগুন্তক, কারা কী করতে পারে তারা জানেন। এমনকি এলাকায় কারা মানসিক বিকারগ্রস্থ এবং যারা ভিকটিম হচ্ছে তারা কেমন চেয়ারম্যান, মেম্বাররা জানেন। তাই তাদেরও এগিয়ে আসা দরকার।’
গুজব রটিয়ে মারধরকারীদের পাশাপাশি তামাশা দেখে ভিডিও ধারণকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন এসপি নুরে আলম মিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাইকে বলছি আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে পুলিশকে জানাতে। গুজব রটনাকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। যারা গণপিটুনিতে অংশ নেবে এবং যারা তামাশা দেখে ভিডিও ধারণ করবে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এসপি জানান, গত ২০ জুলাই সীতাকুন্ড উপজেলার ফৌজদার হাটে ছেলেধরা সন্দেহে মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারীকে মারধর করা হয়। এই ঘটনায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। ২২ জুলাই বাঁশখালীর ইলশা গ্রামে ছাগল কিনতে যাওয়া তিন ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় ছয় জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়। এর মধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
একইদিন একই উপজেলার বাণীগ্রামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে মারধরের ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে সেখানে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাতকানিয়া উপজেলার কেরাণীহাটে একই ধরনের আরেকটি ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে এদেশে পেট্রোল বোমা, ২০১৬-১৭ সালে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় সফল হতে না পেরে পদ্মাসেতু নির্মাণে ছেলেধরার গুজব রটানো হচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে- চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এ কে এম এমরান ভূঁইয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) মশিউদ্দৌল্লাহ রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) আফরুজুল হক টুটুল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মহিউদ্দিন মাহমুদ সোহেল উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমও