‘রোহিঙ্গারা বিদেশি নাগরিক হিসেবে মিয়ানমারে থাকতে পারবে’
২৮ জুলাই ২০১৯ ২০:১৪
কক্সবাজার: মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব না পেলেও দেশটির নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী বিদেশি নাগরিক হিসেবেও থাকতে পারবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব মিন্ট থোয়ে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের বিদেশি নাগরিক হিসেবে মিয়ানমারে থাকার অনুমোদন রয়েছে। সে হিসেবে পরিচয়পত্রও পাবেন তারা। তাতে তাদের মধ্যে জাতীয়তা কিংবা গোত্র নিয়ে কোনো ধরনের বিরোধ থাকবে না।
রোববার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে উখিয়ার কুতুপালংয়ের ডি-৪ ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিব। এদিন বৈঠকে মুসলিম রোহিঙ্গার পাশাপাশি হিন্দু ও খ্রিস্টান রোহিঙ্গারাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মিন্ট থোয়ে সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন অনুযায়ী তিন ধরনের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। ওই আইনের ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী যারা তিন প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করে আসছে, তাদের ‘ন্যাচারালাইজড সিটিজেনশিপ’ দেওয়ার সুযোগ আছে। তাই রোহিঙ্গারা সরাসরি নাগরিত্ব না পেলেও এই ধারার আওতায় তারা মিয়ানমারে বিদেশি নাগরিক হিসেবে থাকার বৈধতা পাবেন। এই পরিচয়ে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রও দেওয়া হবে।
এর আগে, সকালে ক্যাম্প-৪-এ মুসলিম রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মিয়ানমারের প্রতিনিধি দল। বৈঠকে মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মিন্ট থোয়ে। অন্যদিকে, ৩০ সদস্যের রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন মাস্টার মুহিব উল্লাহ। এর মধ্যে পাঁচ জন ছিলেন নারী। তাদের সঙ্গে ছিলেন আসিয়ানের ৫ প্রতিনিধিও। পরে চার জন খ্রিস্টান ও ১০ জন হিন্দু রেহিঙ্গার সঙ্গে বৈঠকে বসে মিন্ট থোয়ের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল।
এর আগে, গতকাল শনিবার (২৭ জুলাই) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সফররত মিয়ানমার ও আশিয়ান ডেলিগেশন টিমের সঙ্গে আলোচনা শুরুর আগে ‘নো স্পেস টক টু আস’ প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন রোহিঙ্গারা। পরে দীর্ঘ ৩ ঘণ্টা ধরে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চললেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর নিপীড়ন-নির্যাতনের মুখে রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিতে থাকেন রোহিঙ্গারা। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে কয়েক দফায় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেন বাংলাদেশে, তাদের স্থান হয় কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের পাড়ের ৩৪টি শিবিরে। মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও একাধিকবার চেষ্টা করেও বাস্তুচ্যুত এই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি। এর মধ্যে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের তালিকাও তৈরি করেছিল মিয়ানমার। সেই তালিকায় থাকা রোহিঙ্গারাও নিজ ভূমে ফিরতে পারেননি।