Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একগুচ্ছ স্বপ্ন দেখিয়ে মেয়র নাছিরের ‘নির্বাচনী’ বাজেট


৩১ জুলাই ২০১৯ ০৩:২৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, কনভেনশন হল, জোনভিত্তিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণসহ একগুচ্ছ স্বপ্ন দেখিয়ে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে সিটি করপোরেশন।

মেয়াদকালের মধ্যে মেয়র হিসেবে আ জ ম নাছির উদ্দীনের এটাই শেষ বাজেট। একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি থাকায় এই বাজেট রূপ পেয়েছে ‘নির্বাচনী’ বাজেট হিসেবে। তবে চট্টগ্রাম নগরীর মূল সংকট হিসেবে বিবেচিত জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো প্রতিশ্রুতি আসেনি, নেই কোনো বরাদ্দও।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। এতে বাজেটের আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিটি করপোরেশনের অর্থ স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন হিরণ।

২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ২ হাজার ৪৮৫ কোটি ৯১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার। এছাড়া ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের ২ হাজার ৪৫ কোটি ৫১ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেটও ঘোষণা করা হয়েছে।

বাজেট ঘোষণার সময় মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সিটি করপোরেশনকে ‘শক্ত আর্থিক বুনিয়াদের’ ওপর গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে ১২টি আয়ের খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নির্ভর করা হয়েছে সরকারি অনুদানের উপর। এক হাজার ৭০২ কোটি টাকা প্রত্যাশিত অনুদানের বিপরীতে নিজস্ব উৎস থেকে প্রাপ্ত আয় দেখানো হয়েছে মাত্র ৭৩২ কোটি ২৬ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। ত্রাণ সাহায্য থেকে ২০ লাখ টাকা এবং বিবিধ উৎস থেকে ৫১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা প্রত্যাশিত আয় দেখানো হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ২১টি খাতে ব্যয় দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ব্যয় হবে ৫৪৫ কোটি ১৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ত্রাণ, বকেয়া দেনা পরিশোধসহ আরও ৬টি খাতে ব্যয় হবে ১৯৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। উদ্বৃত্ত থাকবে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি ব্যয় হবে বেতন-ভাতা ও পারিশ্রমিক খাতে। এই খাতে ব্যয় ২৮২ কোটি ৯০ লাখ টাকা। বকেয়া দেনা শোধ করতে হবে ১৭৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার।

বিজ্ঞাপন

বাজেটে চট্টগ্রামকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে সিটি করপোরেশন। ১৩৬৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নগরীর বহদ্দারহাট থেকে বারইপাড়া হয়ে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খননের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র। এ প্রকল্পের জন্য ৮৫১ কোটি ২৫ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পাওয়া গেছে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এই টাকা ভূমি অধিগ্রহণের জন্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে দেওয়া হয়েছে।’

বাজেটে একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতির মধ্যে আধুনিক নগর ভবন নির্মাণ, এয়ারপোর্ট রোড সম্প্রসারণ ও বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ, সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, যানজট নিরসনে মেট্রোরেল চালু, মাষ্টারপ্ল্যান অনুযায়ী নতুন সড়ক নির্মাণ, ফিরিঙ্গিবাজার থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত ফ্লাইওভার নির্মাণ, জোনভিত্তিক থিয়েটার ইনস্টিটিউট নির্মাণ, আধুনিক কনভেনশন হল, উন্মুক্ত উদ্যান ও স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ উল্লেখযোগ্য।

এই বাজেটকে বাস্তবায়নযোগ্য উল্লেখ করে মেয়র দাবি করেছেন, গতবছরের বাজেটের ৮৪ শতাংশ তিনি বাস্তবায়ন করেছেন।

মিডিয়ার সহযোগিতা পেলে বাজেট বাস্তবায়ন সহজ হয় মন্তব্য করে মেয়র বলেন, ‘সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার মতো সহযোগিতা চাই। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিষদ তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে বদ্ধপরিকর।’

প্রস্তাবিত বাজেটে জলাবদ্ধতা নিরসনে কোনো বরাদ্দ না থাকার বিষয়ে মেয়র বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনের মেগাপ্রকল্প সিডিএ বাস্তবায়ন করছে। এক বা একাধিক প্রকল্প শুধু গ্রহণ করলে তো জলাবদ্ধতা দূর হবে না। তবে আমরা যে নতুন খাল খনন করব, সেটা জলাবদ্ধতা নিরসনে সহায়ক হবে।’

সারাবাংলা/আরডি/এমও

আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ফ্লাইওভার বাজেট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর