‘এমনিতেই রোগে জর্জরিত এখন আবার ডেঙ্গু, আমরা যাব কোথায়!’
৩১ জুলাই ২০১৯ ২১:০২
ঢাকা: রাজধানীসহ সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কে রয়েছেন বস্তিবাসীরা। ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতার অভাবের কারণে তারা রয়েছেন এই রোগের ঝুঁকিতে। এ বিষয়ে বস্তিবাসীদের বক্তব্য, আমরা এমনিতেই রোগে জর্জরিত। এখন শুনছি ডেঙ্গুর কথা। আমরা যাব কোথায়?
বুধবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের চাঁদ উদ্যানের পাইওনিয়র হাউজিং এলাকার বস্তিতে ডেঙ্গু বিষয়ক সচেতনতামূলক প্রচারণায় তারা এ কথা বলেন। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বারসিক ও হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালের উদ্যোগে এ প্রচারণা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রচারাভিযানে বারসিকের পক্ষ থেকে বস্তিবাসীদের সচেতন হওয়ার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। বারসিকের পক্ষ থেকে প্রচারণায় অংশ নেওয়া কর্মকর্তারা বলেন, বস্তিতে এমনিতেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকে। তাই ডেঙ্গুর আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে হলে সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। কেউ যেন পানি জমিয়ে না রাখে, জ্বর হলেই যেন ডাক্তারের কাছে যায়। জ্বর হলে প্রচুর খাবার পানি, স্যালাইন ও ডাবের পানি খেতে হবে।
পাইওনিয়ার হাউজিংয়ের তিনটি কিশোরী সংগঠন শাপলা, সুখপাখি ও রজনীগন্ধাও এই প্রচারাভিযানে অংশ নেয়।
অভিযানে বস্তিবাসী নেত্রী আসমানী বেগম বলেন, বস্তিবাসীরা খুব কষ্টে দিন কাটায়। এখানে সারাবছরই রোগ-শোক লেগেই থাকে। এখন ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের সবাই খুবই আতঙ্কিত। অনেকেই জ্বর হয়েছে, কিন্তু তারা জানে না ডেঙ্গু কি না। সরকারের পক্ষ থেকে কেউ এসে তাদের খোঁজ নেয় না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
কিশোরী সংগঠনের নেতা রেশমা বলে, আমরা বস্তির ঘরে ঘরে গিয়ে সবাইকে ডেঙ্গু সম্পর্কে বলছি। আমরা চাই বস্তির কেউ যেন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত না হয়।
বারসিকের প্রকল্প সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা বারসিকের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি মানুষকে সচেতন করতে। আমরা আহ্বান জানাই, সব সচেতন মানুষ এই দুর্যোগে এগিয়ে আসুক নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী। তিনি বস্তিবাসীদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন এবং প্রয়োজনে সিটি করপোরেশনের হেল্প ডেস্কে যোগাযোগ করতে বলেন।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল বলেন, ঢাকা শহরে এক দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। সরকারের সব শক্তিকে এই ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজে লাগানো যেমন দরকার, ঠিক একইভাবে সমাজের সব স্তরের মানুষকে এ সংকট মোকাবিলায় এগিয়ে আসতে হবে।
বারসিকের সহকারী কর্মসূচি কর্মকর্তা সুদিপ্তা কর্মকার বলেন, সচেতন মানুষরা এ পরিস্থিতিতে বসে থাকতে পারে না। তাই সবাই যার যার জায়গা থেকে ভূমিকা পালন করবেন।
কর্মসূচিতে বস্তিবাসী নেত্রী ঝুমুর বেগম, শাহিদা বেগম, রমজান আলীসহ তিন শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু উপস্থিত ছিলেন।