Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আধুনিক ঢাকা গড়তে শিশু-যুবকদের সঙ্গে সংলাপে মেয়র আতিকুল


১ আগস্ট ২০১৯ ০১:২৬

ঢাকা: সুস্থ, সচল, আধুনিক ও শিশুবান্ধব ঢাকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সাথে ‘মিট মাই মেয়র’ শিরোনামে শিশু ও যুব সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নগর পরিকল্পনায় শিশুদের মতামত ও চিন্তার প্রতিফলন ঘটাতে আয়োজন করা হয় এই সংলাপ। যেখানে শিশু ও যুবকরা ভবিষ্যতের ঢাকা শহরকে নিয়ে তাদের প্রত্যাশা এবং এ বিষয়ে তাদের প্রস্তাবনা নিয়ে নগরপিতার সঙ্গে সরাসরি কথা বলে।

বুধবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা প্রায় ১০০ শিশু-কিশোর ও যুবকের অংশগ্রহণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মিলনায়তনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংলাপটি যৌথভাবে আয়োজন করে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ প্ল্যানারস (বিআইপি) এর এক গবেষণায় উঠে এসেছে যে গত ৯ বছরে ঢাকা শহরের ৩৬ শতাংশ জলাভূমি ভরাট হয়ে গেছে। ঢাকা শহরে ২ ঘণ্টার বৃষ্টিপাত হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। শহরের মানুষের বিশেষ করে শিশুদের, বৃষ্টি হলেই স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পরিবেশ থাকছে না। এর ফলে তাদের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্ন হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ জানতে চায় উপস্থিত শিশু-কিশোর এবং যুবকরা।

প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক রাজধানীতে গণপরিবহনের সংকট লাঘবে চার হাজার বাস দিয়ে সাতটি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালনার কথা জানিয়েছিলেন, সে প্রসঙ্গেও সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিকল্পনা জানতে চায় উপস্থিত শিশু ও যুবকরা।

রাজউকের ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) অনুযায়ী প্রতি ১২ হাজার ৫০০ মানুষের জন্য কমপক্ষে ২টি করে খেলার মাঠ থাকার কথা। কিন্তু পুরো ঢাকা শহরে ২৩৫টি খেলার মাঠ রয়েছে যার মধ্যে কেবল মাত্র ৪২টি খেলার মাঠে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশাধিকার রয়েছে। ড্যাপ অনুসারে উত্তরা আবাসিক এলাকায় ৩৮টি অতিরিক্ত খেলার মাঠ দরকার। প্রায় ৪ লাখ জনসংখ্যার মোহাম্মদিয়া হাউজিং এবং আদাবর ওয়ার্ডে যেখানে ৬৩ টি খেলার মাঠ থাকার কথা সেখানে ১ টিও খেলার মাঠ নেই।

বিজ্ঞাপন

নাগরিক সেবাগুলো আরো ভালোভাবে প্রদানে ঢাকার সকল নাগরিক সুবিধা প্রদানকারী সংস্থার কার্যক্রমকে সমন্বয় করার কথা বারবার বলা হয়েছে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে। উপস্থিত শিশু ও যুবকরা এসব প্রসঙ্গেও মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেগুলোর বাস্তবায়ন সম্পর্কে জানতে চায়।

মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমি দুঃখিত যে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ নেই। আমরা একটা প্রোগ্রাম করেছি; এখানে খেলার মাঠও থাকবে পার্কও থাকবে, এটা মাল্টিপারপাস হবে। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ হলো স্কুল-কলেজে চিঠি পাঠানো যাতে তারা তাদের মাঠগুলো বাচ্চাদের খেলার জন্য খুলে দেয়। কয়েকটি মাঠে লাইটের ব্যবস্থা রাখছি যাতে সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে বাচ্চারা চাইলে রাতে খেলতে পারে। পর্যাপ্ত আলো দিয়ে তারা যাতে নিরাপদে খেলতে পারে তার ব্যবস্থা হবে। ছয়টি জায়গার টেন্ডার খুলে দিয়েছি, এই বছরের মধ্যেই চারটি মাঠ-পার্ক সম্পূর্ণ হবে। ঢাকায় পর্যাপ্ত জায়গা নেই, প্রয়োজন হলে ব্যক্তিগত জায়গা কিনে মাঠ তৈরি করতে হবে। আমরা সরকারের কাছে এই আবেদনও জানাবো।”

গত বছর থেকেই সঠিক পদক্ষেপ না নিলে এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে বলে বিশেষজ্ঞরা প্রতিনিয়ত আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। তাদের কথা অনুযায়ী সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়ার ফলে এ বছর ঠিকই ডেঙ্গু মহামারী আকার ধারণ করেছে। কেন এখনো ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না এ নিয়ে মেয়রের পরিকল্পনা শুনতে চায় তারা এবং মশার ওষুধ দেওয়ার জন্য সিটি করপোরেশনের কর্মীরা টাকা চায় বলে অভিযোগ করে শিশুরা। ওই মুহূর্তেই এই সমস্যাটির সমাধান করার উদ্যোগ নেন মেয়র।

তিনি শিশুদের জানান, এ ধরনের অনিয়ম দেখলেই ভিডিও করে এবং ছবি তুলে তার কাছে পাঠিয়ে দিতে এবং তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবেন বলে কথা দেন উপস্থিত সবাইকে।

ঢাকা শহরে সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন স্থাপনা বা সেবা তৈরি হয়েছে কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো পরিমাণে বেড়েছে কিন্তু নাগরিকদের সেবা দেওয়ার মত যথেষ্ট মান বাড়েনি, এ বিষয়েও প্রশ্ন রাখে শিশু ও যুবকরা।

ওয়ার্ডগুলোতে নারীদের মতামত বক্স রাখার পাশাপাশি শিশুদের মতামত বক্স রাখার জন্যও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেন মেয়র।

সংলাপটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অফ প্ল্যানারস (বি আই পি) এর সহ-সভাপতি প্রফেসর ড. আকতার মাহমুদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল হাইসহ সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন মেয়র আতিকুল ইসলাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর