ঢাবি সাংবাদিকতা বিভাগের ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
১ আগস্ট ২০১৯ ১৬:৩৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৫৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। সাংবাদিকতা বিভাগের প্রতিষ্ঠা দিবস ২ আগস্ট হলেও এবার তা শুক্রবার অর্থাৎ সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় একদিন আগেই বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। দিবসটির প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়, জার্নালিজম ফর জাস্টিস বা ন্যায়ের জন্য সাংবাদিকতা।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হয়ে সামাজিক বিজ্ঞান ভবনের সামনে দিয়ে লেকচার থিয়েটারের গিয়ে শেষ হয়।
এরপর আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সভায় ‘সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য সাংবাদিকতা’ বিষয়ে বক্তৃতা দেন কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমসহ বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম তার বক্তৃতায় আইনের শাসনের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচারের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। সরকার, সুশীল সমাজ ও সাধারণ জনগণের কাছে এর সংজ্ঞা একেক রকম। সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আইন, বিচার ও শাসন বিভাগের উপর সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকা উচিত নয়।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, মিয়ানমার ও শ্রীলঙ্কার সাংবাদিকদের চেয়ে বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা অনেক সাহসী উল্লেখ করে তিনি জানান, বাংলাদেশে সাংবাদিকতা বেশি আশাব্যঞ্জক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের উপকারিতা ও অপকারিতা তুলে ধরে এসময় এর অপব্যবহারে রোধে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।
অধ্যাপক মনজুরুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকতায় বস্তুনিষ্ঠতা বলতে কিছু নেই। বস্তুনিষ্ঠতার ফাঁকে অপরাধীরা পার পেয়ে যায় বলে দাবি করেন তিনি। তাই সত্যনিষ্ঠা, ন্যায় ও নিয়মনিষ্ঠার জন্য সাংবাদিকতা হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, ন্যায়বিচারের জন্য স্থিতিশীলতা দরকার। যারা অস্থির প্রকৃতির তারা কখনও উদার মনের হতে পারবে না। তাদের মধ্যে এক ধরনের কঠোরতা, কট্টরবাদিতা চলে আসে।
তিনি আরও বলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ স্নাতকরা সমাজের বিভিন্ন পরিবর্তনসূচক ক্ষেত্রে অবদান রাখছেন। এর কারণ সত্যনিষ্ঠা ও বস্তুনিষ্ঠতা সম্পর্কে তাদের প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচারের মূল্যবোধ এই বিভাগের নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবেশ করুক। তাহলে বিভাগের উত্তরোত্তর উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুরো সমাজ কল্যাণ লাভ করবে।
সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, সমাজে ন্যয়বিচারের সমবণ্টন জরুরি। সেদিকটাতে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পক্ষ থেকে এ ধরনের আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, এতে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের ভবিষ্যত দিক নির্দেশনা তুলে ধরা যায়। বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিক হিসেবে যাতে তারা ভবিষ্যতে কাজ করতে পারে সে ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখে।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে আমরা সমাজ সচেতনতায়, রাষ্ট্রীয় সচেতনতায় ভূমিকা রাখার লক্ষেই এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছি। শোকের মাসে উৎসবের আমেজে না করে অ্যাকাডেমিক আমেজে প্রতিবছর বর্ষপূর্তির আয়োজন করা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভাগের শিক্ষার্থীরা শান্তি, সম্প্রীতির জয় কামনায় বিশেষ সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
সারাবাংলা/কেকে/এনএইচ/এমএম