যেসব রাষ্ট্রদূত বহুদিন বিদেশে, তাদের বদলি করছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
১ আগস্ট ২০১৯ ২২:২৭
ঢাকা: বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় করতে, নবীন কূটনীতিকদের দক্ষতা বাড়াতে এবং প্রশাসনে সুশাসন নিশ্চিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংস্কার হচ্ছে। এই সংস্কার ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে। দেশের বাইরে যে সকল রাষ্ট্রদূত দীর্ঘদিন বা ১৪/১৫ বছর ধরে আছেন প্রথম ধাপে তাদের স্টেশন বদলি করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন গণমাধ্যমের কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে তার দফতরে আলাপকালে এ তথ্য জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মিনিস্ট্রিতে আমরা অফিসিয়ালি যথেষ্ট পরিবর্তন আনছি। কারণ জুন, জুলাই, আগস্ট এরপর সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বাইরে স্কুল বা শিক্ষার্থীদের ক্লাশ শুরু হয়। আমাদের যারা রাষ্ট্রদূত তারা অনেকেই একেক দেশে অনেকদিন রয়ে গেছেন। আগে একটা নিয়ম ছিল যে, প্রতি ৩ বছর পর একটা পরিবর্তন হতো। গত নির্বাচনসহ একাধিক কারণে এই পরিবর্তন হয়নি। এবার আমরা অনেক কর্মকর্তাকে পরিবর্তন করেছি, এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে বদলি করেছি। অনেক সিনিয়র রাষ্ট্রদূতকে আমরা দেশে নিয়ে আসছি। যারা দীর্ঘদিন বিদেশে, অনেকেই আছেন যে ১৪/১৫ বছর ধরে বিদেশে আছেন, আমরা তাদের দেশে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছি। আমরা কয়েক জায়গাতে পরিবর্তনও করেছি।’
তিনি বলেন, ‘চীনে আমাদের যে রাষ্ট্রদূত আছেন, তিনি অনেক উন্নতমানের, প্রায় ১৫ বছর ধরে দেশের বাইরে আছেন। তাকে দেশে নিয়ে আসছি। তার যথেষ্ট অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞান। তিনি অনেক দক্ষ লোক। তাকে আমরা ভালো পজিশনে রাখতে চাই, যাতে আমাদের ভবিষ্যত ডিপ্লোমেটরা অনেক উন্নতমানের হয়।’
‘যারা বিদেশে অনেকদিন আছেন তাদের অনেকেরই স্টেশন বদলি করছি। এটা আমরা ফেইস বাই ফেইস করছি। আবার অনেকে বিদেশে আছেন যাদের অবসরে যাওয়ার সময় হয়েছে। তারা বলেছেন যে, তারা বিদেশে থেকেই অবসরে যেতে চান। আমরা বলেছি যে ঠিক আছে।’
‘জাতিসংঘে আমাদের পক্ষে যিনি প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি হচ্ছেন মাসুদ বিন মোমেন। অনেকেই তাকে আমার ছেলে হিসেবে মনে করে কিন্তু উনার সঙ্গে আমার এমন কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি অনেক অভিজ্ঞ এবং সাকসেসফুল কূটনীতিক। তাকেও আমরা দেশে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে আমরা আরও বেশি উপকৃত হতে পারি।’
‘জাতিসংঘ একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সেখানে জাপানের রাষ্ট্রদূতকে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করতে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি চৌকশ এবং কর্মঠ।’
‘তার জায়গাতে জাপানে যাকে পাঠানোর জন্য প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেটা আটকে গেছে। অন্য কাউকে জাপানে পাঠাব।’
এ তথ্য জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন বলেন, ‘কোনো কিছু করতে গেলেই নানা ধরনের বাধা বা তদবির আসে। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে যারা বহুদিন বিদেশে আছেন, তাদের আমরা এবার ঢাকা নিয়ে আসব। যাতে দেশের সঙ্গে তাদের আরো বেশি সম্পৃক্ততা হয়। সবাইকে আবার দেশে আনব না কিন্তু স্টেশন পরিবর্তন করব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ব্রাসেলেলসেও পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি ১৪/১৫ বছর ধরে ওখানে আছেন। সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দ্বিপক্ষীয় সচিবকে পাঠানো হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর বাইরে নিচের পর্যায়ে বা কাউন্সিলর এমন পর্যায়ে অনেক পরিবর্তন করেছি। এ ছাড়া আমাদের নবীন কূটনীতিকদের কাজে উৎসাহ বাড়াতে আমরা অনেক পদন্নতিও দিয়েছি। প্রায় ১৮ জনের মতো কর্মকর্তাকে আমরা মহাপরিচালক পর্যায়ে উন্নীত করেছি। এতো পদ নেই তবে আমরা প্রশাসনের সংস্কার করছি। সংস্কারের চূড়ান্ত রূপরেখা প্রায় চূড়ান্ত। এতদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনে যেটা ছিল যে নিচের দিকে অনেক পদ বা কর্মকর্তা কিন্তু ওপরের দিকে নেই। এ জায়গাতে আমরা সংস্কার আনছি। অন্য মন্ত্রণালয়ের মতো আমাদের মন্ত্রণালয়েও নরমাল ডিস্ট্রিবিউশনের মতো করতে চাচ্ছি।’