‘উন্নয়নকে যারা রোধ করতে চায়, তারাই সাম্প্রদায়িক ঘটনার আশ্রয়দাতা’
২ আগস্ট ২০১৯ ১৫:০৯
ঢাকা: বাংলাদেশকে কেউ কেউ জঙ্গি ও মৌলবাদী-সন্ত্রাসী দেশে পরিণত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, কেউ কেউ ওসামা বিন লাদেন বা মোল্লা ওমরের আফগানিস্তান কিংবা জিয়াউল হকের পাকিস্তানের মতো জঙ্গি ও মৌলবাদী-সন্ত্রাসী দেশ বানাতে চায় বাংলাদেশকে। যারা এটা চায়, যারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিস্ময়কর আর্থসামাজিক উন্নয়নের পথ রোধ করতে চায়, তারাই সাম্প্রদায়িক ঘটনার আশ্রয়দাতা।
শুক্রবার (২ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উদ্যোগে ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ প্রচার: অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ণ করুন’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহরিয়ার কবির বলেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি প্রতিষ্ঠার পর প্রায় তিন দশক ধরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের দাবির পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে জনমত সংগঠিত করার জন্য কাজ করে চলেছে। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেকোনো অজুহাত তৈরি করে সাম্প্রদায়িকতাকে উসকে দিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, তাদের সেই আঘাত বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সংবিধানের ওপর।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া তার সহযোগীদের হত্যার পর বাংলাদেশের সমাজ ও সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশকে পাকিস্তানিকরণের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা এখনো বন্ধ হয়নি। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে নিয়মিত।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তরা আরও বলেন, দেশে এখনো বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ওপরে বিভিন্ন অজুহাতে নির্যাতন চালানো হয়। এসব খবর অনেক সময়ই জাতীয় দৈনিকে স্থান পায় না। এসময় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরেন তারা। কক্সবাজারের রামু ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে হামলার ঘটনাসহ সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনার বিচার দাবি করেন বক্তারা।
শাহরিয়ার কবীর বলেন, আমাদের প্রতিবেশী মিয়ানমারে সম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে দেশটির প্রায় ১৫ লাখ সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মানবতার অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। সেই দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত কারণে সংখ্যালঘু হওয়ার জন্য কেউ লাঞ্ছিত ও নির্যাতিত শিকার হবেন— এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, আমরা আশা করব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে কেউ রাষ্ট্রীয় চেতনার মূলে আঘাত করতে চাইলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী এ ধরনের উদ্যোগ প্রতিহত করার জন্য সরকার পাশাপাশি গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যরিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, অধ্যাপক মুনতাসির রাবিন, শহীদ জায়া স্যামলী নাসরিন চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি শাহরিয়ার কবির সংখ্যালঘু নির্যাতন সাম্প্রদায়িকতা