ড্রোন দিয়ে গরুর হাট পর্যবেক্ষণের ঘোষণা সিএমপির
৩ আগস্ট ২০১৯ ১৭:০৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে মনুষবিহীন আকাশযান (ড্রোন) দিয়ে কোরবানির পশুর হাট পর্যবেক্ষণের ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। চাঁদাবাজি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে নগরীর বড় দুটি হাট সাগরিকা ও বিবিরহাটকে ঘিরে থাকছে ড্রোন দিয়ে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা। পর্যায়ক্রমে ছোট হাটগুলোও মনিটরিংয়ের ক্ষেত্রেও ড্রোন পদ্ধতি ব্যবহারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে সিএমপি।
শনিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো পশুর হাটগুলোতে ড্রোন ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। নগরীর দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে এই সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।
এর আগে সিএমপি কমিশনারের সভাপতিত্বে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও গরুর হাট নিয়ে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে জেলা প্রশাসন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, প্রাণীসম্পদ বিভাগ, র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, পরিবহন মালিক-শ্রমিক, ফায়ার সার্ভিস, চেম্বার-বিজিএমইর প্রতিনিধি, গরুর হাটের ইজারাদার ও উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং নগরীর সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ছিলেন। এরপর সংবাদ সম্মেলন করে সিএমপি কমিশনার আবারও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীতে ১১টি পশুর হাট বসবে। প্রত্যেকটি হাটে দৃশ্যমান পুলিশ কন্ট্রোল রুম থাকবে। প্রত্যেক হাটে একটি করে ওয়াচ টাওয়ার, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকবে। এর বাইরে এবার আমরা প্রথমবারের মতো ড্রোনের মাধ্যমে গরুর হাট মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।’
সংবাদ সম্মেলনের পরে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত পুলিশ কমকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ড্রোন দিয়ে কোরবানির পশুর হাট পর্যবেক্ষণের বিষয় নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নগরীর পাহাড়তলী থানার সাগরিকা গরুর বাজার এবং পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট গরুর বাজার ড্রোন বসিয়ে পর্যবেক্ষণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
সিএমপির উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিএমপির কাছে নিজস্ব কোনো ড্রোন নেই। পাহাড়তলী থানার ওসি জানিয়েছেন- তিনি নিজস্ব উদ্যোগে একটি ড্রোন সংগ্রহ করেছেন। সেটি দিয়ে সাগরিকা বাজার মনিটরিং করা হবে। কমিশনার স্যার পাঁচলাইশ থানার ওসিকেও একটি ড্রোন সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন যাতে বিবিরহাট বাজারও মনিটরিং করা যায়। প্রয়োজনে ড্রোন ভাড়া নেওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে। অন্যান্য ছোট ছোট যেসব বাজার আছে, ড্রোন পাওয়া সাপেক্ষে সেগুলোও একই পদ্ধতিতে মনিটরিং হবে।’
নিরাপত্তায় ৫ হাজার পুলিশ
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সিএমপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাঁচটি সেক্টরে ৫ হাজার পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। কোরবানির প্রাণীর হাট, বাসস্ট্যান্ড-রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চঘাট ও মার্কেট, ঈদ জামাত, কোরবানির প্রাণীর চামড়া কেনাবেচার স্থান ও পরিবহন এবং বিনোদন স্পটগুলোতে থাকছে চার স্তরের নিরাপত্তা। সিএমপির নিজস্ব টিমের সঙ্গে থাকবে এপিবিএন, র্যাব, বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিট, কুইক রেসপন্স টিম, কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এছাড়া ডিবি-সিটি এসবি এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তথ্য সংগ্রহ করে সিএমপিকে সহযোগিতা করবে।
এতে আরও জানানো হয়, নগরীর ১১টি প্রাণীর হাট, চারশ’রও বেশি ঈদের জামাত, ৫৪টি কোরবানির প্রাণী কেনাবেচার স্থান, ১৫টি বিনোদন কেন্দ্র, ১৪৬টি আবাসিক এলাকা, রেলস্টেশন-বাসস্টেশন সিএমপির নিরাপত্তা বলয়ে থাকবে।