Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে


৩ আগস্ট ২০১৯ ২৩:০৪

মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ পর্যন্ত জেলায় ৩৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এদের মধ্যে মারা গেছেন একজন। তবে জেলার সিভিল সার্জনের দাবি, মুন্সীগঞ্জে কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়নি, তারা ঢাকা থেকে আক্রান্ত হয়ে এখানে এসেছেন।

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে জেলার টঙ্গিবাড়ি উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিগাঁও বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন (৪০) শুক্রবার মারা যায়। এর আগে গত বুধবার তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার মিডফোর্ট হাসপাতালে ভর্তি করা।

বর্তমানে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন, সিরাজদিখান উপজেলায় ৫ জন এবং শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে ৪ জন, সিরাজদিখান থেকে ২ জন, শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১ জন, টঙ্গিবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১ জনসহ মোট ৮ জনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এছাড়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে ১২ জনসহ তিনটি হাসপাতাল থেকে ১৪ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এবং ১৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জেলার সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ডিভাইস দিয়ে ১৫০ জনকে পরীক্ষা করতে পারবে। মুন্সীগঞ্জে এ পর্যন্ত ৫৬ জনকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় কারও ডেঙ্গু ধরা পড়েনি। জেলায় যারা ডেঙ্গু রোগী তারা ঢাকায় আক্রান্ত হয়ে এখানে এসে ভর্তি হয়েছেন। তবে প্রয়োজনে ডেঙ্গু টেস্ট ডিভাইস আরও সরবরাহ করা হবে। ’

তবে শুক্রবার বন্ধের দিন থাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীদের ডেঙ্গু টেস্টসহ অন্যান্য পরীক্ষা বাইরে থেকে করতে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকার কথা থাকলেও ময়লা আবর্জনা দেখা গেছে হাসপাতালের ভেতরেই। পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ যাবতীয় ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে বলে রোগীদের অভিযোগ। এতে দরিদ্র রোগীদের হিমশিম পোহাতে হচ্ছে। শিশু থেকে বয়স্ক পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী রোগীর সংখ্যাই বেশি।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তোফাজ্জল হোসেন জানান, কিছু কিছু পরীক্ষা রোগীদের বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। বন্ধের দিনসহ অন্যান্য দিনে ডেঙ্গু সনাক্তকরণ করার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা হাসপাতালেই করা যাচ্ছে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের বেশির ভাগ আশপাশের এলাকা থেকে এসেছে। সরবরাহ সীমিত হওয়ায় দরিদ্র ও ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা যাদের বেশি তাদেরকে ডেঙ্গু টেস্ট করা হচ্ছে।

সদর উপজেলার হাতিমারা থেকে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি এক ডেঙ্গু রোগী জানান, পাঁচ দিন ধরে তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি একজন মুদি দোকানদার। ডেঙ্গু পরীক্ষা থেকে শুরু করে অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং স্যালাইন ও ওষুধ সবই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। মুদি দোকানদারের দাবি, মুন্সীগঞ্জেই তার ডেঙ্গু হয়েছে। তিনি দুই থেকে তিন মাস ধরে ঢাকায় যান না।

দুর্গাবাড়ি থেকে থেকে আসা এক রোগী জানান, তিনি আট দিন ধরে জ্বরে আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বাইরে থেকে ওষুধ, স্যালাইন কিনে এনেছেন। কিন্তু কোনো ডাক্তার বা নার্স স্যালাইন পুশ করতে আসছে না।

মালিরপাথরের হতদরিদ্র মা-বাবা তার শিশু কন্যাকে নিয়ে এসেছেন মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে। শহরের সুপার মার্কেটের মডার্ন নামে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৮৫০ টাকায় ডেঙ্গু পরীক্ষা করেছেন। তবে ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়েনি। এছাড়া স্যালাইন এবং ওষুধও বাইরে থেকে কিনেছেন তারা।

চরকেওয়ারের এক নারী তার শিশুপুত্রকে নিয়ে আজ সকালে হাসপাতালে এলে তার ঠাঁই মিলেছে হাসপাতালের বারান্দার ফ্লোরে। তাকে বাইরে থেকে ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি হাসপাতাল থেকেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করার জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত বাড়ছে মুন্সীগঞ্জ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর