মধ্য ও উচ্চ আয়ের দেশ হতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা গড়তে হবে
৪ আগস্ট ২০১৯ ০৩:০৬
ঢাকা : দেশের অর্থনীতির উন্নতির পথে ছোটবড় কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। ব্যাংক ও বীমা খাতে সংস্কারের মাধ্যমে এসব প্রতিবন্ধকতা কমিয়ে আনা সম্ভব। দেশকে কাঙ্খিত মধ্য ও উচ্চ আয়ের দেশ হিসাবে গড়তে হলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য প্রযোজন দেশের অনুকূল রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশ ব্যবসাবান্ধব করা প্রয়োজন।
শনিবার (৩ আগষ্ট) ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্স (ডিএসসিই) আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা স্কুলের উদ্যোক্তা অর্থনীতি বিভাগের প্রধান সমন্বয় অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে ‘ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স প্রসিডিউরস অ্যান্ড হিন্ডারেন্স ফর এন্টারপ্রেনিউরিয়াল ইকোনমিক্স গ্রথ’ শীর্ষক ওই জাতীয় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতি সমিতির সহসভাপতি ও ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের (আইএফআইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এজেডএম সালেহ।
সেমিনারে বক্তব্য রাখেন পূবালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হেলাল আহমেদ চৌধুরী, এনসিসি ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ নুরুল আমিন, বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট ফর প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্টের (বিআইপিডি) মহাপরিচালক কাজী মো. মর্তুজা আলী, ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া সাবাহ‘র সহকারী অধ্যাপক ড. শফিকুজ্জামান সিদ্দিকী, ঢাকা স্কুলের সহযোগী অধ্যাপক রেহানা পারভীন ও সারা তাসনীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
হেলাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, নিজের কর্মসংস্থান ও দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে উদ্যোক্তা হওয়ার বিকল্প নেই। উদ্যোক্তা হতে হলে ঝুকি নিতে হবে, জ্ঞান অর্জন করতে হবে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার সক্ষম হতে হবে। ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত নতুনদের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, অর্থনীতিতে বৈষম্য থাকবে এটি স্বাভাবিকভাবে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের বৈষম্য অস্বাভাবিক। এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে বৈষম্য তৈরি করা হচ্ছে। একগোষ্ঠীকে নানাভাবে সব ধরনের ব্যবসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই বৈষম্যের কারণে অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশে উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়োজন। কিন্তু উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি গড়ে উঠেনি। উদ্যোক্তাদের জন্য গড়ে তোলা ইইএফ ফান্ড নষ্ট হয়েছে। উদ্যোক্তারা ব্যর্থ হলে ‘এক্সিট পলিসি’ নেই। তবে দেশ এগোতে হলে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করা প্রয়োজন। এজন্য যারা উদ্যোক্তা হতে চান তাদেরকেও নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে হবে ও ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা থাকতে হবে।
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, দেশের অর্থনীতি ব্যাংক ও বীমা খাত অবদান রাখছে। তবে কিছু সংকট চলছে। সেই সংকট নিরসন করে বীমা খাতকে জনপ্রিয় করতে হবে এবং ব্যাংক খাতকে উদ্যোক্তা বান্ধব করতে হবে। এসএমই ও গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাংক ও বীমা প্রসারের সুযোগ অনেক। নতুন নতুন উদ্যোক্তাদের তৈরি ব্যাংক খাতকে এগিয়ে আসতে হবে।
মূল প্রবন্ধে এজেডএম সালেহ বলেন, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা অনেক চ্যালেঞ্জের। ব্যক্তি পর্যায়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব রয়েছে নতুন উদ্যোগ গড়ে তোলার জন্য। নতুন ব্যবসা ও শিল্প গড়ে তুলতে যেসব বাধাবিপত্তি আসে তা সরকারের নীতির মাধ্যমে দূর করতে হবে। সরকারি নীতি যেন উদ্যোক্তাদের জন্য বাধা হয়ে দাড়াতে না পারে। পাশাপাশি ব্যাংক ও বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত উদ্যোক্তাদের ঝুঁকি নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোর।
কাজী মুর্তজা আলী বলেন, উচ্চ সুদহার উদ্যোক্তাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এতে ব্যবসার খরচ বাড়ছে। দেশের বর্তমান রাজস্ব নীতি সঞ্চয়প্রবণতা নিরুৎসাহিত করছে। আর সঞ্চয় কমে গেলে বিনিয়োগের তহবিল কমে যাবে।
সারাবাংলা/জিএস।