Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঈদ নয় সিরাজগঞ্জের মানুষ চিন্তিত স্বাভাবিক দিনাতিপাত নিয়ে


৪ আগস্ট ২০১৯ ১২:৪১

সিরাজগঞ্জ: ঈদ আসতে আর বাকি সপ্তাহখানেক। অথচ সিরাজগঞ্জের মানুষ স্বাভাবিক দিনাতিপাত আর ঘরবাড়ি রক্ষা নিয়েই অনেক চিন্তিত। দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও কমেনি বানভাসিদের দুর্ভোগ। বন্যায় সিরাজগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার প্রায় সোয়া তিন লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ৪৩৪ জন। আংশিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিন লাখ ১৩ হাজার ১৭৭ জন।

গ্রামের সাধারণ মানুষ নানা সঙ্কটে দিন পারে করলেও বন্যা, নদী ভাঙনে আরো ভেঙ্গে পড়ে সবাই। তখন ভিজিএফ, ভিজিডি ও বয়স্ক ভাতার অনুদানই তাদের শেষ সম্বল হয়ে দাঁড়ায়। এসব সাহায্যও কখনো মেলে কখনো মেলে না। তাই ঈদের আনন্দ তাদের কাছে এখন ঘুমিয়ে দেখা সুখ স্বপ্নের মতো।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয় থেকে জানা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলা কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুরে ৩৯টি ইউনিয়ন ও তিনটি পৌরসভার ৪০০টি গ্রাম সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ৮২ হাজার ২৮১টি। এর মধ্যে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত তিন হাজার ২৮৩টি ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৯৯৮টি। বানভাসি সবাই বেঁচে আছে সরকারি-বেসরকারি কিংবা বিভিন্ন এনজিও’র দেওয়া ত্রাণের উপর ভর করে।

সরেজমিনে গিয়ে বন্যায় পানিবন্দি মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় বেরিয়ে আসে তাদের জীবন-যুদ্ধের করুণ কাহিনী। ‘বেঁচে থাকার তাগিয়ে যে যা পারছে তাই করে কোনোরকম জীবিকা নির্বাহ করছে। আবার কেউ কেউ অনাহারে-অর্ধাহারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।

বন্যা কবলিতরা বলেন, ঈদের আনন্দ করবো কি দিয়ে। দু’বেলা দুমুঠো পেটের ভাতই জোগাড় করতে পারি না। সেখানে ঈদের আনন্দ করার চিন্তা আনবো কি করে। ঈদকে সামনে রেখে মানুষ যখন আনন্দ নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা ঘরবাড়ি রক্ষা করা নিয়ে ব্যস্ত। সামনের দিনগুলা কেমনে চলমো সেই চিন্তায় আইতোত (রাতে) ঘুমেই আইসে না। এইবার বন্যায় আমাগো সর্বস্বান্ত করল। কোরবানি দেওয়া তো দূরের কথা ঈদের দিন পরিবারকে একটু সেমাই খাওয়াতে পারব কিনা জানি না।

শিাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, চরের অভাবী মানুষগুলোর কাছে ঈদ যেন শুধুই স্বপ্ন। কারণ সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় তাদের ঘরবাড়ি সহায়-সম্বল সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। কৈজুরি ইউনিয়নে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। ফসল ফলিয়ে এলাকার মানুষ স্বচ্ছল হয়ে উঠেছিল। অনেকেই বাড়িতে ধান চাল মজুদ রেখেছিলেন। কিন্তু এ বছর বন্যার পানি ওঠায় মানুষের ঘরে রাখা ধান-চালও নষ্ট হয়ে গেছে।

সিরাজগঞ্জ বানভাসী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর