Friday 04 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চিন্তা-চেতনায় তিনি ছিলেন সবার থেকে আলাদা’


৫ আগস্ট ২০১৯ ১৭:৫৯
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কলেজে পড়াকালীন সময় থেকেই সম্পৃক্ত হতে শুরু করেন রাজনীতির সঙ্গে। চিন্তা চেতনা ছিলেন সবার থেকে আলাদা। দেশকেও ভালোবাসতেন সবার থেকে বেশি। দেশের প্রতি অপরিসীম ভালোবাসার কারণেই হয়তো সবার মাঝে প্রিয়জন ছিলেন।

রাজনীতির পাশাপাশি অন্যান্য অঙ্গনেও ছিল তার পদচারণা। ক্রীড়াঙ্গণের প্রতি ছিল তার বিশেষ ভালোবাসা। নাটক কিংবা থিয়েটার সবকিছুতেই ছিলেন পারদর্শী। তার সবচেয়ে ভালো যে গুণটি ছিল তা হলো—মানুষের সঙ্গে মিশে থাকা। যে একবার তার সঙ্গে কথা বলেছে বা তার সঙ্গে সময় কাটিয়েছে সে কখনই ভুলতে পারেননি তাকে। এমন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ খুব কমই ছিলেন বাংলাদেশে। ৭০ তম জন্মবার্ষিকীতে এসে এভাবেই শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করলেন তার ছাত্রজীবনের বন্ধু বর্তমান শিল্পমন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৫ আগস্ট) শেখ কামালের ৭০তম জন্মবার্ষিকী। তার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রেস ক্লাবে স্মৃতিচারণ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সম্প্রীতি বাংলাদেশ সভাটির আয়োজন করে।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, কামালের চেয়ে বয়সে কিছুটা বড় হলেও আমাদের সম্পর্ক ছিল বন্ধুত্বের। ঢাকা কলেজে পড়ার সময় বন্ধুত্ব হয় আমাদের। পরবর্তীতে সবকিছুই করেছি একইসঙ্গে। শেখ কামালই প্রথম আমাকে ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন। আমার রাজনীতি জীবনের শুরুটা হয়েছিল কামালের হাত ধরেই। এখন পর্যন্ত রাজনীতিকে আঁকড়ে ধরে আছি।

তবে ৭০ দশকের কথা মনে পড়লে কেমন যেন মন খারাপ হয়ে যায় আমার। শেখ কামালের জন্ম বা মৃত্যুবার্ষিকীতে মন খারাপ হয়ে যায়। মনে পড়ে যায় ৭০ দশকে ঢাকা শহরে দাপিয়ে বেড়ানোর স্মৃতিগুলো। কামাল যদি বেঁচে থাকতেন তাহলে হয়তো বাংলাদেশের চিত্র আজ এমন হতো না। মাত্র ২৬ বছরের আয়ূকালে কামাল এত কিছু করে গেছে তা আর অন্য কারও পক্ষে করা সম্ভব না। কামাল যা করে গেছেন তা কখনই ভুলে যাওয়ার মতো না।

এসময় শিল্পমন্ত্রী ৭০ দশককে তার জীবনের সোনালি সময় বলে অ্যাখ্যা দেন। রাজনীতির শুরুটা যেভাবে হয়েছিল সেটিই জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া হিসেবে মনে করেন তিনি। বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আমাকে সম্পৃক্ত করেন কামাল নিজেই। পরবর্তীতে শেখ কামালই জোর করে আমাকে ছাত্রলীগ থেকে বের করে যুবলীগের হাল ধরতে বলেন। কামালের কথাতেই পরবর্তীতে যুবলীগের সঙ্গে দীর্ঘদিন সম্পৃক্ত ছিলাম।

শিল্পমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন, শুধু রাজনীতির অঙ্গণে না শেখ কামাল আরও অনেক কিছুর সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। তাদের একসময়ের আড্ডা দেওয়ার জায়গা ছিল আবাহনী লিমিটেডে। সেসময় আবাহনী নামে কোনো ক্লাব ছিল না। আড্ডা দিতে দিতেই পরবর্তীতে তার হাত ধরে আবাহনী লিমিটেডের জন্ম হয়। ক্রীড়াঙ্গণে শেখ কামালের ছিল অবাধ বিচরণ।
মন্ত্রী বলেন, শেখ কামাল বারবার দেশের ক্রীড়াঙ্গণে বড় ভূমিকা রাখার কথা বলতেন। যেহেতু নিজেই একজন খেলোয়াড় ছিলেন। তাই স্বপ্ন দেখতেন দেশের ফুটবলকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার। সে অনুপাতে কাজও করেছিলেন দেশের ফুটবলকে নিয়ে।

এছাড়া ঢাকায় নাটক-থিয়েটারের জন্ম হয় কামালের হাত ধরেই। কামাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম নাটক ও থিয়েটার করেন। পরবর্তীতে তার সঙ্গে যুক্ত হন তার বন্ধুরা। অনেকেই তখন অভিনয় শুরু করেন। তারপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সেখান থেকেই এর ডালপালা গজিয়ে বড় অবস্থানে গিয়েছে দেশের নাটক ও থিয়েটার।

কামাল ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছেলে। কিন্তু আমরা তাকে কখনই তার বাবার পরিচয় দিতে দেখিনি। নিজের যোগ্যতার বলেই কামাল হয়ে উঠেছিলেন একজন অন্যান্য ব্যক্তিত্ব। কামালের মধ্যে যত গুণ ছিল খুব কম মানুষই তার মতো মেধাবী ছিল।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, শেখ কামালের বন্ধু মুক্তিযোদ্ধা মেজর দোস্ত মোহাম্মদ সিকদার, বিএম-এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনসহ অনেকে।

সারাবাংলা/এএম/এমআই

চিন্তা চেতনা শেখ কামাল সবার থেকে আলাদা