জুলাইয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স
৫ আগস্ট ২০১৯ ২১:২৭
ঢাকা: ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম মাসেই (জুলাই) প্রবাসীরা ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মে মাসে বিদেশ থেকে ১৭৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে। যা এখন পর্যন্ত এক মাসে সর্বোচ্চ। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি। এর আগে গত জুন মাসে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৩৮ কোটি মার্কিন ডলার।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম সোমবার (৫ আগস্ট) বিকালে সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ব্যাংকের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। বিশেষ করে হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে নেওয়া নানা উদ্যেগের সুফল পাওয়া যাচ্ছে।’
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫৯ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ৩৭ কোটি ৭৮ লাখ মার্কিন ডলার। কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ২ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এছাড়াও ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১১৮ কোটি ২৯ লাখ ডলার। অন্যদিকে নয়টি বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ডলার এসেছে।
এবার মূলত কোরবানির ঈদ ও বাজেটে রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে বলেও জানা গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১ হাজার ৬৪১ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল।
সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের প্রথম থেকেই বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ। গত জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ ১৫৯ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠায়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে ১৩১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, মার্চে ১৪৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার, এপ্রিলে ১৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, মে মাসে ১৭৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং জুন মাসে রেমিট্যান্স আসে ১৩৮ কোটি মাকির্ন ডলার।
অন্যদিকে ২০১৮ সালের জুলাই মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠায় ১৩১ কোটি ৭০ লাখ ডলার, আগস্টে ১৪১ কোটি ১০ লাখ ডলার, সেপ্টেম্বরে ১১২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, অক্টোবরে ১১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, নভেম্বর ১১৮ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ১২৩ কোটি ডলার।
বছরভিত্তিক রেমিট্যান্স
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যনুযায়ী, পঞ্জিকা বছর হিসাবে ২০১৮ সালে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার। ২০১৭ সালে ১ হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ডলার।
অন্যদিকে অর্থবছর হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার এবং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে ১ হাজার ৬৩১ কোটি মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশী রয়েছেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জিডিপিতে অবদান রেখেছে ১২ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর শীর্ষ ১০টি দেশ হলো যথাক্রমে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, মালয়েশিয়া, কুয়েত, ওমান, যুক্তরাজ্য, কাতার, ইতালি ও বাহরাইন।