অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ে মুন্সীগঞ্জে সরকারি কলেজের ৩টি ভবন ধস
৬ আগস্ট ২০১৯ ০০:৫২
অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ে মুন্সীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী হরগঙ্গা সরকারি কলেজের ৩টি ভবন দেবে গেছে। এছাড়া, কলেজের একটি শ্রেণী কক্ষ ও রোভার্স ভবন এবং মূল ভবনের আইটি বিভাগ ভাঙনের কবলে পড়ে। কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ স্ট্রেডিয়ামে ড্রেজার মাধ্যমে বালু ভরাট করার সময় পানি হরগঙ্গা কলেজের পুকুরে পড়ে। ঐ পানিতে কলেজের দুইতলা বিশিষ্ট মূল ভবনের একাংশ ভেঙে যায়।
এছাড়া এর পাশের রাস্তাসহ ২টি শ্রেণী কক্ষ পুকুরে ভেঙে পড়ে। এ ভবনে প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, আইটি বিভিাগ, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চলত। ভবন ধসের কারনে এখন এসব বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আইসিটি বিভাগের মোট ৫৭টি কম্পিউটার ও অনান্য ইলেকট্রনিক সামগ্রী উদ্ধার করা জটিল হয়ে পড়েছে, যার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
প্রাণিবিদ্যা ও উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগে প্রায় ৩ কোটি টাকার মালামল রয়েছে। কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী আলিফ আহম্মেদ জানায়, আমরা কলেজের পুকুর পাড়ের পূর্ব পাশে বসে ছিলাম। হটাৎ বিকট শব্দ হয়। পরে দেখা যায়, রোভার্সের ভবনটি ধসে পড়ছে। পাশে থাকা একাদশের শ্রেণী কক্ষটি ভেঙে পরেছে। এরপরই পানির তীব্রতার কারণে রোভার্রস ভবনের পিছনে থাকা মূল ভবনের একাংশ (আইটি বিভাগ) ভেঙে পড়ে।
এদিকে স্টেডিয়ামের কাজের সাব কণ্ট্রাকটর রাসেল বলেন, আমাদের ড্রেজারের পানি ড্রেনের মাধ্যমে যায়। যখন প্রশ্ন করা হয় যে, কলেজের দিকে কেন পানের লেন কাটা হয়েছে, তার সদুত্তর দিতে পারেনি। আপাতত পানির লেনটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
কলেজের উপাধ্যক্ষ নাসিমা আহমেদ দাবি করে বলেন, স্টেডিয়ামের ড্রেজারের পানি কলেজের পুকুরে পড়ায় ভাঙনের কবলে পড়ে কলেজের মূল ভবনসহ অন্যান্য স্থাপনা।
কলেজর আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ড্রেজারের পানির চাপে ৩টি ভবনের নিচে তলদেশে বালি মাটি সরে যায়। মাটি সরে যাওয়ার কারণেই ভবন ধস হয়েছে। সাবেক শিক্ষার্থী ও মুন্সীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শহীদ ই হাসান তুহিন বলেন, দায়ী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব মূল ভবন সংস্কার করে সেটা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা এটা আমাদের দাবী। কি কারণে এমন ঘটনা ঘটলো তা বিশেষজ্ঞ দিয়ে কমিটি গঠন করে সঠিক কারণ নির্নয় করতে হবে।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিউল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে পানির তোরে খাদের মতো সৃষ্টি হওয়ায় ভবনগুলো ক্ষতি গ্রস্ত হয়েছে। প্রচন্ড গতিতে ড্রেজারের পানি প্রবেশের মাধ্যমে ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভবনগুলোর ক্ষতির প্রকৃত কারণ জানার চেষ্টা চলছে। আইটি বিভাগের কম্পিউটার ও অনান্য ইলেকট্রনিক সামগ্রী উদ্ধারের জোর চেষ্টা চলছে। শিক্ষা অধিদপ্তর ও গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে পরবর্তী করণীয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় কারো গাফলতি আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।