‘প্রকল্প ৩ বার সংশোধনের জন্য এলে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হবে’
৬ আগস্ট ২০১৯ ১৩:২০
ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘প্রকল্প একবার সংশোধন হতে পারে, কিন্তু তিন বার সংশোধন হবে কেন? এটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। তৃতীয়বার প্রকল্প সংশোধনের জন্য এলে তা প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হবে। এটা প্রধানমন্ত্রী ভালো চোখে দেখেন না। কারা কারা তিনবার সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আসেন, তাদের তালিকা একনেকে আনা হবে।’
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা অংশ নেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্পের গুণগত মান নিশ্চিত করতে পর্যায়ক্রমে সব বড় প্রকল্পে সিসি ক্যামেরা বাসানো হবে। ইতিমধ্যেই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কিছু প্রকল্পে মনিটরিং শুরু হয়েছে। প্রযুক্তি যেহেতু এগিয়ে যাচ্ছে আমরা কেন তার ব্যবহার করবো না। এক্ষেত্রে নতুন করে একনেক সভার এজেন্ডায় প্রয়োজনে এরকম প্রকল্পের তালিকা যুক্ত করতে হবে।’
মন্ত্রী জানান, গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে সংশোধিত এডিপির ৯৪.৩৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। তার আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাস্তবায়িত হয়েছিল ৯৪.১১ শতাংশ। নির্বাচনী বছর থাকায় নির্বাচন কমিশনের কারণে তিন মাস ঠিক মতো কাজ করতে না পারলেও গত অর্থবছরে সংশোধিত এডিপির বাস্তবায়নের আমরা সন্তুষ্ট। নির্বাচন না থাকলে গত অর্থবছর ৯৯ শতাংশ সংশোধিত এডিপি বাস্তবায়ন হতো। চলতি অর্থবছর আশা করছি শতভাগ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
প্রকল্পের বাস্তবায়ন বৃদ্ধিও উদ্যোগ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকল্প পরিচালকরা যাতে প্রকল্প এলাকায় থাকেন এবং তাদেও যাতে ঘনঘন বদলি করা না হয় সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। তাছাড়া মাঠ পর্যায়ে চষে বেড়ানোর যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেটি আরও বৃদ্ধি করা কবে। এই মাসেই আরও একটি বিভাগে যাব। প্রতি ২ মাস পরপর মন্ত্রণালয়গুলোর প্রকল্প প্রণয়নের সঙ্গে যারা যুক্ত অর্থাৎ প্রধান এবং যুগ্ম প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। সচিবরা নিজেরাও যাতে প্রকল্প এলাকায় যান সেজন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে।’
ভূমি সমস্যার কারণে অনেক প্রকল্প দিনের পর দিন আটকে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘অনেক প্রকল্পে দেখা যায় বিশাল জমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু শুধু মাত্র একটি কোয়ার্টার তৈরি করে ফেলে রাখা হয়। যেমন বেতার সাভারে বিশাল জমি নিয়েছে উচ্চ ক্ষমতার কি যেন তৈরি করেছে। সেরকম জমি নেওয়ার সুযোগ নেই। কোনো প্রকল্পে একান্তই যদি ধানী জমি নিতে হয় তাহলে ২০ বার ভাবতে হবে। তাছাড়া এখন তো জমি নিতে তিনগুণ দাম দিতে হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী একনেক বৈঠকে যেসব অনুশাসন দেন, সেগুলো যাতে বাস্তবায়ন করা হয় সেজন্য সচিবদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া একটি বই আকারে অনুশাসনগুলো পাঠানো হবে। যেমন কোনো প্রকল্পে দেখা যায় ১০ তলার অনুমোদন নিয়ে তিন তলা করার প্রস্তাব করা হয়। এটা প্রধানমন্ত্রী পছন্দ করেন না। ১০ তলা ভিত্তি হলে ১০ তলা বিল্ডিংই করতে হবে।’
‘প্রকল্প তৈরির আগে অবশ্যই সম্ভাব্যতা সমীক্ষা করতে হবে, কেননা সঠিক সমীক্ষা ছাড়া প্রকল্প সঠিকভাবে তৈরি করা সম্ভব নয়। প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাড়াতে তিন মাস পর পর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে বৈদেশিক সহায়তা অংশের অর্থ ব্যয় বেশি বাড়ানো যায়’, বলেন মন্ত্রী।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা সচিব মো. নূরুল আমিন এবং সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।