চুক্তির ‘গ্যাঁড়াকলে’ ব্রহ্মপুত্রে আটকে আছে পাথর বোঝাই ২ জাহাজ
৭ আগস্ট ২০১৯ ০৮:০২
কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের চিলমারী ঘাটের পূর্ব দিকে ব্রহ্মপুত্র নদে পাথর বোঝাই দু’টি জাহাজ এমবি ঈগল ও এমবি বদিউজ্জামান-২ ১৩ দিন ধরে আটকে আছে। ভারতের আসাম থেকে ছেড়ে আসা জাহাজ দু’টিতে প্রায় ৫০০ মেট্রিক টন পাথর রয়েছে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশি দুই ব্যবসায়ী নিয়ম মেনেই ভারতের আসাম থেকে নৌপথে ভুটানের পাথর আমদানি করেছেন। তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, ভুটানের পণ্য কেবল বুড়িমারী ও বাংলাবান্ধা দিয়ে আমদানির অনুমতি আছে। কিন্তু ওই দুই ব্যবসায়ী কাস্টমসের কোনো ক্লিয়ারেন্স না নিয়েই নৌপথে পাথরগুলো আমদানি করেছেন। এই জটিলতার কারণে জাহাজ দু’টি ১৩ দিন ধরে ব্রহ্মপুত্রে আটকে আছে।
এদিকে, জাহাজ দু’টির বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে রংপুর কাস্টমস বিভাগ। মন্ত্রণালয় থেকে সিদ্ধান্ত এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে রংপুর কাস্টমস অফিস সূত্রে জানা গেছে।
তবে কাস্টসের রংপুর বিভাগীয় কর্মকর্তা আকতার হোসাইন জাহাজ দু’টিকে ‘আটকে রাখা হয়েছে’ বলে মানতে নারাজ। তার ভাষায়, জাহাজ দু’টিকে সাময়িকভাবে ‘চলৎশক্তিহীন’ করে রাখা হয়েছে।
রাজস্ব ও আমদানির সব প্রক্রিয়া শেষ করার পরও কেন জাহাজ দু’টিকে আটকে রাখা হয়েছে?— এমন প্রশ্নের জবাবে রংপুর কাস্টমসের (সেক্রেটারি দ্বিতীয়) কর্মকর্তা আকতার হোসাইন বলেন, ব্রহ্মপুত্র দিয়ে নৌরুটে আমদানির বিষয়ে দুই দেশের চুক্তি হলেও বাস্তবে আমরা এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। এটি তদারকি করতে চিলমারী পয়েন্টে এখনো লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এটি না জেনেই শেরপুরের দুই ব্যবসায়ী ভারত থেকে পাথর আমদানি করেছেন। ফলে জাহাজ দু’টিকে সাময়িকভাবে ‘চলৎশক্তিহীন’ করে রাখা হয়েছে।
আকতার হোসাইন বলেন, তারা (জাহাজ মালিক) আবেদন করেছেন। কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে পাথর ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন খান জানান, গত ২৫ জুলাই থেকে জাহাজ দু’টি আটক রেখে টালবাহানা করছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। সম্ভাবনার নতুন একটি দিগন্তকে গলা টিপে হত্যা করতে চাইছেন বলে অভিযোগ তার।
নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর আসাম থেকে নৌপথে পাথর আমদানি এই প্রথম। এর আগে ১৮ জুলাই বসুন্ধরা গ্রুপ ভুটান থেকে এ পথেই পাথর আমদানি করেছে। একে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত বলে অভিহিত করেছেন ভারত, ভুটান ও বাংলাদেশের হাইকমিশনাররা। কিন্তু অজানা কারণে কাস্টমস গত ১৩ দিন ধরে পাথর বোঝাই জাহাজ দু’টিকে আটকে রেখেছে। জাহাজ দু’টি আটক থাকার কারণে আমাদের প্রতিদিন খরচ হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার টাকা।’
বসুন্ধরা গ্রুপের নৌপথে পাথর আমদানির বিষয়ে কাস্টমস কর্মকর্তা বলেন, ‘দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিসাপেক্ষে সেটা হয়েছে। আপাতত বুড়িমারী ও বাংলাবান্ধা রুট ছাড়া অন্য কোনো রুটে ভুটানের পাথর আমদানির অনুমতি নেই।’
এদিকে কুড়িগ্রামের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুল হকের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে জাহাজের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাঁচ মিনিট পর ফোন দেবেন বলে লাইন কেটে দেন। কিন্তু পরে আর তিনি ফোন দেননি। পরে ফোন করেও তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
এমবি ঈগল ও এমবি বদিউজ্জামান-২ চিলমারী পাথর বোধাই জাহাজ ব্রহ্মপুত্র নদ