শোক পালনের বরাদ্দে হতাশ প্রাথমিকের শিক্ষকরা!
৭ আগস্ট ২০১৯ ১৩:৪৫
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদত বার্ষিকী বা জাতীয় শোক দিবস পালনে প্রথমবারের মত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। তবে বরাদ্দের পরিমাণ কম হওয়ায় এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা।
এ বছর শোক দিবস পালনের জন্য প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই টাকায় বিদ্যালয়গুলোতে শোক দিবসে সভা-সমাবেশ, প্রতিযোগিতা, শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও খাবার পরিবেশন করার নির্দেশ দিয়ে এরই মধ্যে চিঠি পাঠিয়েছে শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক শিক্ষকরা বলছেন, শোক পালনের জন্য যে রকম অনুষ্ঠান ও খাবার বিতরণ প্রয়োজন তা দুই হাজার টাকায় কোনোভাবেই সম্ভব নয়। রাজধানীর ও এর বাইরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলার কাছে এই অভিযোগ করেছেন।
ঢাকার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, শোক দিবস বাঙালি জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটি পালনে মাত্র দুই হাজার টাকায় কি করা যায়? প্রাথমিকের শিশুরা যদি বঙ্গবন্ধুকে ভালোভাবে জানতে না পারে, তাহলে তারা ভুল ইতিহাস পড়ে বড় হবে। আর এখানেই কিনা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে কম!
শোক দিবসে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ চাইলে এখানে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়াতে হবে এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল হতে হবে বলেও মতামত প্রকাশ তিনি।
এ ব্যাপারে ডিপিইর মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মঞ্জুর কাদির বলেন, ‘এবারই প্রথম শোক দিবস পালনে অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছি। এর আগে অর্থ বরাদ্দই দেওয়া হতো না। এটি যেহেতু শুরু হয়েছে, আশা করছি এই প্রক্রিয়া থামবে না। ধীরে ধীরে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণও বাড়বে। ’
মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘বরাদ্দের পরিমাণ কম হয়েছে সেটি মেনে নিচ্ছি। এই টাকায় অনেক স্কুলে খুব ভালো কিছু করা সম্ভব হবে না। আবার অনেক স্কুলে এ টাকাতেই ভালো আয়োজন সম্ভব। সবাইকে বলব তারা যেন ভালো আয়োজন করার চেষ্টা করে। পরের বছর থেকে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব।’
শোক দিবসের কর্মসূচি বাবদ ব্যয় হিসেবে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই হাজার টাকা করে ধার্য করা হয়েছে। সে অনুযায়ী সারাদেশের প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। ১৪ জুলাই মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, জাতীয় শোক দিবস পালনে এবার নানা আয়োজন হাতে নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এদিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোতে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, হামদ-নাত প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ, দোয়া মাহফিল এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আপ্যায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।