আইন মন্ত্রণালয়ের এক ‘হকের’ বিদায়!
৭ আগস্ট ২০১৯ ২১:২২
ঢাকা: অবসরে গেলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক। অবসরের পর দুই বছর চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব পালন শেষে বিদায় নিলেন তিনি।
জহিরুল হকের বিদায়ের মধ্য দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা তিন ‘হকে’র এক হক বিদায় নিলেন বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। মন্ত্রী নিজে ও জহিরুল হক ছাড়াও মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শহিদুল হকের নামের সঙ্গে ‘হক’ পদবী থাকাকে ইঙ্গিত করেন তিনি।
বুধবার (৭ আগস্ট) বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক দুলালকে বিদায় সম্মাননা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইনমন্ত্রী।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমি আনিসুল হক, উনি জরিহরুল হক। পাশেই আছেন আমার সিনিয়র সচিব শহিদুল হক। আমরা তিন ‘হক’ ছিলাম। তিন ‘হক’ মিলে যখনই কোনো কিছু করেছি, ঐক্যমতের ভিত্তিতেই করেছি। আমাদের মধ্যে কখনো দ্বিমত হয়নি। আমরা আলাপ করেছি, সমস্যার সমাধান করেছি। আমরা নিজেদের বক্তব্য দিয়েছি এবং যেটাই মনে হয়েছে যৌক্তিক, সেটাই আমরা গ্রহণ করেছি।
স্মৃতিচারণ করে আইনমন্ত্রী বলেন, একটা সময় (সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকার সময়) গেছে, যেটাকে আমরা বলব তাণ্ডবের সময়। সে সময়ে প্রতিদিন সকালে ঝড় হতো। তখন আমরা খুব মানসিক চাপে থাকতাম। আমাদের এক ধরনের যুদ্ধ করতে হয়েছে। সবসময় আমাদের বড় শক্তি ছিল যে আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। আমাদের যদি কোন সাফল্য থেকে থাকে, তাহলে তার পেছনে এ ঐক্যই কাজ করেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা ছিলাম স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। আমরা বাংলাদেশের স্বার্থের ব্যাপারে কোনো আপস করিনি।
আনিসুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হলেও বাংলাদেশ এখনো বঙ্গবন্ধুকে হত্যার কলঙ্কমুক্ত হয়নি। এই কলঙ্ক তখনই ঘুচবে যখন আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারব। বঙ্গবন্ধু যে ৫৫ বছর বেঁচেছিলেন, তার সবটা সময়ই তিনি এই দেশের জন্য দিয়ে গেছেন। আমরা যদি সোনার বাংলা গড়তে পারি, তাহলেই বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণ হবে।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী আইন সচিব বলেন, বিদায়ের সময় আমার কিছুই বলার নেই। আমি সবার সঙ্গে চলেছি, সবার সঙ্গে মিশেছি, অনেক কিছু শিখেছি, সবাই মিলে অনেক কাজ করেছি। এই চলার পথে যদি কোনো ভুল-ত্রুটি করে থাকি, মাফ করে দেবেন। আমার জন্য দোয়া করবেন। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন, নিবন্ধন অধিদফতরের মহাপরিদর্শক খান মো. আব্দুল মান্নানসহ অন্যরা।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইন সচিব হিসেবে দায়িত্ব পান জহিরুল হক। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে অব্সরে গেলে সরকার তাকে আরও দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।