গাড়ি চলে না…
৮ আগস্ট ২০১৯ ২০:৫৬
ঢাকা: খিলগাঁও ফ্লাইওভার থেকে সবুজবাগ-বাসাবো পয়েন্ট নেমে যে যানবহনগুলো ঢাকার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে গন্তব্য নির্ধারণ করেছিল, সেগুলোর চাকা আজ আর তেমনটি ঘোরেনি। রাজধানীর অন্যতম বৃহৎ কোরবানি পশুর হাট ‘মুগদা-বিশ্বরোড-কমলাপুর গরু-ছাগলের হাট’ সড়কটিতে এমন যানজট সৃষ্টি করেছে যে, এ সড়কে গাড়ি আর চলেনি!
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কমলাপুর ফুটভার ব্রিজে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, উত্তরে খিলগাঁও ফ্লাইওভারের গোড়া থেকে দক্ষিণে কমলাপুর স্টেডিয়াম পর্যন্ত এই দুই কিলোমিটার জুড়ে ভয়াবহ যানজট। কারণ, ‘এইচ আকৃতির’ কোরবানি পশুর হাট কমলাপুর স্টেডিয়াম থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণে মানিক নগর, টিটিপাড়া মোড় থেকে শুরু হয়ে পশ্চিমে বাংলাদেশ ব্যাংকের পেছন পর্যন্ত, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণে ‘সাদেক হোসেন খোকা’ কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত বিস্তৃত।
ফলে এই রুটে চলাচল করা শত শত গাড়ি ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। সকাল ৮ টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা তীব্র যানজট। ঘর থেকে বের হওয়া কোনো মানুষ নির্দিষ্ট গন্তব্যে ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারেননি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতেই বসে থাকতে হয়েছে। ভ্যাঁপসা গরমে সবার অবস্থাই কাহিল।
এরমধ্যে কেউ কেউ গাড়ি থেকে নেমে কয়েক কিলোমিটার পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান। তবে গন্তব্য যাদের দূরে, তারা পড়েন চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির মধ্যে ভ্যাঁপসা গরমে বসে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মতিঝল আসার জন্য বাসাবো থেকে বাসে উঠেছিলেন শাহরিয়ার হোসেন। বাসটি কমলাপুর ফুটওভার ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছাতে পৌনে এক ঘণ্টা সময় পার হয়ে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বাস থেকে নেমে ফুটওভার ব্রিজের ওপর দিয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছান। সেখান থেকে হেঁটে মতিঝিল পৌঁছান তিনি।
শাহরিয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শহড়ের ভেতর ব্যস্ত সড়কে কোরবানি পশুর হাট! এটা চিন্তা করা যায়? আগামী চারদিন এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে।’
শুধু এই সড়ক নয়, বৃহস্পতিবার গোটা রাজধানীতে ছিল একই চিত্র। দীর্ঘ ছুটির আগে শেষ কর্মদিবসে নগরের সবাই যেন বেরিয়ে এসেছিল রাস্তায়। অফিস-আদালত শেষ করে যে যার গন্তব্যে ছুটেছেন। তার পর নগরজুড়ে গরু-ছাগলের হাট। সব মিলে ঈদের আগে শেষ কর্মদিবসে রাজধানী ঢাকা ছিল স্থবির।
মীরপুরের বাসিন্দা জুনায়েদ হোসেন সকাল ১০ টায় রওনা দিয়ে পল্টনে পৌঁছেছেন দুপুর ২ টায়। অর্থা ৪৫ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে তার সময় লেগেছে ৪ ঘণ্টা। পথের অর্ধেটকাই তাকে হেঁটে আসতে হয়েছে। যখনই যে গাড়িতে উঠেছেন তিনি, সেগুলোর চাকা যেন নড়তেই চায়নি।
জুনায়েদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘শহড়জুড়ে নির্মাণযজ্ঞ, রাস্তাজুড়ে খোড়াখুড়ি, বিভিন্ন জায়গায় পশুর হাট রাজধানী ঢাকাকে একেবারে স্থবির করে দিয়েছে।’