রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও পেলেন কোরবানির পশু
১০ আগস্ট ২০১৯ ১৮:৪২
কক্সবাজার: মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় কক্সবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত অধিবাসীদের মধ্যে কোরবানির পশু বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। মানবিক সহায়তার অংশ হিসেবে প্রথমবারের মতো এই উদ্যোগ নেওয়া হলো।
শনিবার (১০ আগস্ট) স্থানীয় বাহারছড়া গোল চত্বর মাঠে জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন কোরবানির পশু বিতরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. আশরাফুল আফসার, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানসহ অনেকে।
এদিন বিভিন্ন দাতা সংস্থার সহায়তায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্থানীয়দের মধ্যে ৩০০টি কোরবানির পশু বিতরণ করা হয়।
অন্যদিকে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার রোহিঙ্গা পরিবারে কোরবানির মাংস বিতরণের ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বাংলাদেশে আসার পরে এটা রোহিঙ্গাদের তৃতীয় ঈদুল আজহা। গত দুই কোরবানির ঈদে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যথাযথভাবে মাংস বিতরণ করা হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে তারা ঈদ উদযাপন করেছে। এবারও প্রায় ২ লাখ ১২ হাজার পরিবারে কোরবানির মাংস বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে স্থানীয়রা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে। তাই তাদের কথা মাথায় রেখে কোরবানির মাংসের শতকরা ৩০ ভাগ স্থানীয়দের মাঝে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাকি ৭০ ভাগ পাবে রোহিঙ্গারা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ক্যাম্প ইনচার্জদের তত্ত্বাবধায়নে মাংস বণ্টন করা হবে।
সূত্র জানিয়েছে, তুরস্কভিত্তিক এনজিও ডায়নেট ফাউন্ডেশন রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের মধ্যে ৫০ হাজার কেজি মাংস বিতরণ করবে। স্থানীয়দের মধ্যে কারা কারা কোরবানির মাংস পাবেন সেই তালিকাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শরণার্থী লিয়াকত মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ। আমরা এই দেশে আশ্রয়ে থেকেও আনন্দের সঙ্গে কোরবানির ঈদ উদযাপন করতে পারছি, এটাই আমাদের কাছে অনেক বড় পাওয়া।’
রাবেয়া খাতুন নামে আরেক শরণার্থী বলেন, ‘অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে গত দুই বছর আগে ঠিক এই সময় আমরা নিজ দেশ মিয়ানমার ছেড়ে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিলাম। শুনেছি গত দু’বারের মতো এবারও প্রত্যেকের ঘরে কোরবানির মাংস পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এই সহযোগিতার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তবে আর সহযোগিতার ওপর বাঁচতে মন চায় না। আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই।’