চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে চলন্ত বাসে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা হয়েছে। ওই গৃহবধূর চিৎকারে গরুবোঝাই একটি ট্রাকের চালক বাসটির গতিরোধ করেন। এ সময় পুলিশ ও স্থানীয় জনতা মিলে বাসের চালক ও সহকারীকে আটক করে।
শনিবার (১০ আগস্ট) গভীর রাত দেড়টার দিকে নগরীর কোতোয়ালী থানার এস এস খালেদ সড়কে চট্টগ্রাম ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতার দু’জন হল- নগরীর এক নম্বর রুটের বাসচালক রবিউল আউয়াল (২২) ও সহকারী মো. হৃদয় (২৪)।
ঘটনার শিকার ওই গৃহবধূ স্বামীর সঙ্গে থাকেন নগরীল বাকলিয়া থানার কালামিয়া বাজার এলাকায়। তার বাবার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলায় এবং শ্বশুর বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।
গৃহবধূ মামলার এজাহারে অভিযোগ করেছেন, শনিবার রাত ১১টার দিকে বাবার বাড়ি আনোয়ারা উপজেলা থেকে তিনি শাহ আমানত সেতু এলাকায় পৌঁছেন। কিন্তু বাসার চাবি বাবার বাড়িতে ফেলে আসায় তিনি দেওয়ানহাটে চাচাতো বোনের বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বহদ্দারহাটের বাসে ওঠেন। বহদ্দারহাটে নেমে তিনি এক নম্বর রুটের বাসে ওঠেন, যেগুলো দেওয়ানহাটের পার হয়ে গন্তব্যে যায়।
বাসটি জিইসি মোড়ে যাওয়ার পর অন্যান্য যাত্রীরা নেমে যান। এসময় রবিউল ও হৃদয় গৃহবধূকে দেওয়ানহাট মোড়ে নামিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বাস চালানো শুরু করেন। কিন্তু বাসটি লালখান বাজার মোড়ে যাওয়ার পর দেওয়ানহাটের দিকে না গিয়ে গতিপথ বদলে কাজীর দেউড়ির দিকে যাওয়া শুরু করেন। গৃহবধূ তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে তাকে নামিয়ে দেওয়ার জন্য বলেন।
গৃহবধূর অভিযোগ- তার কথা না শুনে দ্রুতগতিতে বাসটি চালিয়ে কাজীর দেউড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। চট্টগ্রাম ক্লাবের সামনে যাওয়ার পর হৃদয় তার মুখ চেপে ধরে এবং ওড়না দিয়ে গলা পেঁচিয়ে সিটের ওপর ফেলে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। গৃহবধূ এসময় চিৎকার দেন এবং হৃদয়কে ধাক্কা দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে জানালা দিয়ে লাফ দেওয়ার চেষ্টা করেন।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাসের পেছনে ছিল গরুবোঝাই একটি ট্রাক। ট্রাকের চালক চিৎকার শুনে দ্রুত ট্রাকটিকে বাসের সামনে নিয়ে গতিরোধ করে। এসময় গৃহবধূ দ্রুত বাস থেকে লাফিয়ে রাস্তায় পড়েন। তখন স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে বাসের চালক ও সহকারীকে ধরে ফেলে। এর মধ্যে টহল পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তাদের গ্রেফতার করে থানায় আনা হয়।’
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাসের পেছনে ছিল গরুবোঝাই একটি ট্রাক। ট্রাকের চালক চিৎকার শুনে দ্রুত ট্রাকটিকে বাসের সামনে নিয়ে গতিরোধ করে। ঘটনাটি দেখে টহল পুলিশ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সেখানে অবস্থান নেয়। এ সময় গৃহবধূ দ্রুত বাস থেকে লাফিয়ে রাস্তায় পড়েন। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন মিলে বাসের চালক ও সহকারীকে ধরে ফেলে।’
গ্রেফতার দু’জনকে সোমবার আদালতে নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ওসি।