শেষ পর্যন্ত মানুষ স্বস্তিতে বাড়ি ফিরেছে!
১২ আগস্ট ২০১৯ ১৫:১৫
টানা বৃষ্টি ও দুই দফা বন্যার পর দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ আঞ্চলিক সড়ক ও মহাসড়কের অবস্থা ছিল বেহাল। মেরামত কাজ শুরু হলেও অনেক জায়গাতেই তা শেষ হয়নি।
এসব কারণে আগে থেকেই উত্তরবঙ্গের পথে চলাচলকারী পরিবহন মালিকরা আশঙ্কা করেছিলেন ঈদযাত্রার ভোগান্তি নিয়ে। শেষ পর্যন্ত তাদের সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। সড়কে তো যানজট ছিলই রেলের যাত্রীরাও পড়েছিলেন মহা বিপাকে। তার পরও এবারের ঈদ যাত্রাকে স্বস্তির ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সাম্প্রদায়িক অপশক্তির মূলোৎপাটনই আজকের প্রার্থনা: কাদের
বাস্তবে বেশ কিছু ট্রেনের শিডিউলে এমন বিপর্যয় দেখা দেয় যে ঈদ স্পেশাল লালমনিরহাট ট্রেনের যাত্রাই বাতিল করা হয়। কোনো কোনো ট্রেন নির্ধারিত সময়ের ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা পরেও ছেড়েছে।
সব মিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রায় সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন উত্তরবঙ্গের মানুষ। বিশেষ করে মহাসড়কের টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে ছিল দীর্ঘ যানজট। যদিও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বারবারই বলেছেন, যানজট নয়, যানবাহনের ধীরগতি রয়েছে। তবে সরেজমিনে তার সত্যতা মেলেনি। যানজটে আটকে পড়া বহু মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন। বিভিন্ন মাধ্যমে তারা লিখেছেন যে ঠিক কোন পয়েন্টে কতক্ষণ আটকে থাকতে হয়েছে। গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, দীর্ঘ এই যাত্রাপথের বিড়ম্বনার কথাও।
স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ সময় পর বাড়ি পৌঁছেছেন উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। কোথাও কোথাও ১৪ ঘণ্টাও যানজটে আটকা থাকতে হয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক বাসই কাউন্টারে এসেছে চার থেকে আট ঘণ্টা পরে। এরপর যাত্রী ওঠানামাসহ আনুষঙ্গিক কাজে আরও কিছুক্ষণের দেরি। তারপর পথের যানজট। সব মিলিয়ে ভীষণ তিক্ত অভিজ্ঞতা সঙ্গে করে বাড়ি ফিরেছেন যাত্রীরা। শুধু পরিবার পরিজনের সঙ্গে দেখা করার আশায় সব অস্বস্তি মেনেও নিয়েছেন তারা।
সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বড় রাজাপুর গ্রামে নিজের বাড়ির মসজিদে ঈদের নামাজ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঈদযাত্রা নিয়ে স্বত্বি প্রকাশ করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ঈদযাত্রায় নদীতে তীব্র স্রোত ও ভারি বৃষ্টির জন্য চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হয়েছে, এরই মধ্যে সড়কে পশুবাহী গাড়ির জন্যও চলাচলে কোথাও কোথাও সমস্যা হয়েছে। এছাড়া দেশের বেশিরভাগ রুটই ভালো ছিল। তবে শুধুমাত্র ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপারে নলকা পর্যন্ত সমস্যা হয়েছে। সেটা গতকাল ঈদের আগে ছিল না। শেষটা যার ভালো, সেটাই তার ভালো। শেষ পর্যন্ত মানুষ স্বস্তিতে বাড়িতে ফিরেছে।’
ঈদ উদযাপন শেষে এভাবেই মানুষ ‘স্বস্তিতে’ কর্মস্থলে ফিরে যাবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের।
যদি ঈদে বাড়ি ফেরার মতো ‘স্বস্তিতে’ কর্মস্থলে ফিরতে হয় তাহলে নিশ্চিত প্রয়োজনের চেয়ে একদিন আগেই রওনা দেবেন মানুষ। কারণ আগের মতো পরিস্থিতি হলে অন্তত একদিন রাস্তায় যানজটে বসে থেকে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন তারা।