Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমি মাথা নত করব না: খালেদা


৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৭:১৮

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘ন্যায়বিচার হলে আমার কিছুই হবে না, আমি বেকসুর খালাস পাব। শাসকদলকে তুষ্ট করার জন্য অন্যরকম কোনো রায় হলে তা কলঙ্কের ইতিহাস হয়ে থাকবে। আমি যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত আছি। আমাকে জেল বা সাজার ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ হবে না। আমি মাথা নত করব না। জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি থেকে পিছু হটব না।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার রায়ের আগের দিন বুধবার সন্ধ্যায় গুলশানে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘আমাকে রাজনীতির ময়দান ও নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য আদালতকে ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে। একদলীয় শাসন ও খালি মাঠে গোল করার খায়েশ পূরণ হবে না।’

 

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। যেন মানুষ অবাধে ভোট দিতে পারে। সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছি বলেই আমাদের বিরুদ্ধে একের পর মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। তেমনি আমার বিরুদ্ধে একটি মামলা দেওয়া হয়েছে, যার রায় হবে আগামীকাল।’

কিন্তু ওই রায় ঘিরে সরকার ভীত হয়ে জনগণের চলাচলের অধিকার, সভা মিছিলের অধিকার বন্ধ করে দিয়েছে, প্রতিবাদের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।’

‘ন্যায় বিচার হলে আমার কিছুই হবে না, বেকসুর খালাস পাব’— এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি কোনো অন্যায়, কোনো দুর্নীতি করিনি। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কুয়েতের আমিরের বন্ধুত্ব ছিল। জিয়াউর রহমানের নামকে স্মরণীয় রাখতে তার অনুদান তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রীর মাধ্যমে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। সেই অর্থের পরিচালনা কিংবা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত ছিলাম না। এই অর্থ কোনোভাবেই সরকারি নয়।’

বিজ্ঞাপন

 

তিনি বলেন, ‘তারপরও ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো, একটি টাকা তছরূপ হয়নি। সমস্ত টাকা প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংকে জমা আছে। সুদে-আসলে সেই টাকা তিনগুণ হয়েছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আজ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। উন্নয়নের নামে শোষণ, বঞ্চনা, লুটপাটের দুঃশাসন চলছে। আজ জনগণের বুকের ওপর  ‍দুঃশাসন চেপে বসেছে।’

তিনি বলেন, ‘এরা শেয়ারবাজার লুটে খেয়েছে। অর্থ লোপাট করে ব্যাংকগুলো করে ফেলেছে দেউলিয়া। হাজার হাজার কোটি টাকা তছরূপ করছে। সুইস ব্যাংকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। তদন্ত হলেও সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করে না। দোষীদের গ্রেফতার করা হয় না, বিচার হয় না।’

 

খালেদা জিয়া বলেন, ‘দেশে আজ ন্যায়বিচার নেই, ইনসাফ নেই, নিরাপত্তা নেই। দেশ আজ সত্যিকারের সংসদ নেই। তথাকথিত সংসদে নেই প্রকৃত বিরোধী দল। শাসকদের কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে বৈরী প্রচারণা  ও ঘৃণা ছড়ানো হচ্ছে।’

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তারা সংবিধান পরিবর্তন করে জোর করে ক্ষমতায় টিকে আছে। নৈতিক দিক থেকে এরা অবৈধ। এদের কোনো নৈতিক সাহস ও মনোবল নেই। এই শাসকগোষ্ঠীর কোনো গণভিত্তি নেই।  পেশি শক্তি সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে ওরা টিকে আছে।’

‘তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায় না। তারা ক্ষমতায় থেকে সংসদ বহাল রেখেই  নির্বাচন করতে চায়। যাতে মানুষে ভোটে দিতে না পারে। যাতে কারচুপির মাধ্যমে ফলাফল পাল্টে দিতে পারে। এ উদ্দেশ্যেই আমাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ প্রহসন নয়, সতিক্যার নির্বাচন চায়। তেমন নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছি বলেই আমাদের বিরুদ্ধে মামলা।

বিজ্ঞাপন

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, মাহবুবুর রহমান ড. মঈন খান, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ।

 

সারাবাংলা/জেএ/এনএস/একে/জেডএফ/ এজেড

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর