মুগদা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী কমেছে ৩৫ শতাংশ
১৪ আগস্ট ২০১৯ ১৭:৫৩
ঢাকা: গত ২৪ ঘণ্টায় মুগদা হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়েছেন ১৮১ ডেঙ্গু রোগী। আর নতুন করে ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন। ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল ৫৫৩ জন। এই মুহূর্তে ভর্তি আছে ৩৬২ জন।
অর্থাৎ গত তিন দিনে মুগদা হাসপাতালে প্রায় ৩৫ শতাংশ ডেঙ্গু রোগী কমেছে। বিষয়টিকে আপাত দৃষ্টিতে স্বস্তিদায়ক হিসেবে দেখলেও চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্টদের আশঙ্কা ঈদের ছুটি শেষে গ্রাম থেকে মানুষ ঢাকায় ফিরলে রোগীর চাপ আবার বাড়বে।
মুগদা হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. খায়রুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটা খুব স্বস্তির বিষয় যে, গত তিন দিনে রোগীর চাপ বেশ কমেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলেই মঙ্গল। কিন্তু গ্রাম থেকে মানুষ ফেরার পর পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে।’
বুধবার (১৪ আগস্ট) দুপুরে মুগদা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ৬০ শয্যা বিশিষ্ট শিশু ওয়ার্ডের সামনের ফাঁকা জায়াগায় ম্যাট্রেস, ফোম, সিঙ্গেল তোষক দিয়ে যে অতিরিক্ত বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেগুলোর অনেকটাই ফাঁকা। অর্থাৎ ৬০ শয্যা বিশিষ্ট ওয়ার্ডে অতিরিক্ত যে ১ শ’ বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে ২৬ টা বেড ফাঁকা রয়েছে। তিন দিন আগেও এসব বেডে রোগী ভর্তি ছিল।
শিশু ওয়ার্ডে কর্মরত নার্সদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই মুহূর্তে ১২৪ জন রোগী ভর্তি রয়েছে সেখানে। এরমধ্যে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৯৩ জন। অবশ্য হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. খায়রুল আলমের দেওয়া তথ্যমতে শিশুওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ৯৫ জন।
শিশু ওয়ার্ডের এক তলা উপরেই মেডিসিন ওয়ার্ড। তিন দিন আগে সেখানে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি ছিল ৪২৭ জন। আজ সেখানে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২৭০ জন। অর্থাৎ গত তিন দিনে মেডিসিন ওয়ার্ডে ১৫৭ রোগী কমেছে। তার পর ৬০ শয্যা বিশিষ্ট ওয়ার্ডে ২৭০ জন ডেঙ্গু রোগীসহ মোট ৩০৮ জন রোগী নিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও সংশ্লিষ্টরা।
ঈদের পরের দিন মেডিসিন ওয়ার্ডের ফ্লোরে পাতা অতিরিক্ত ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন রোকসানা বেগম। জুরাইন থেকে আসা রোকসানা বেগমের রক্তের প্লেটলেট এই মুহূর্তে ১ লাখ ৫০ হাজার। তার অবস্থা খুব একটা জটিল না হলেও চিকিৎসক এবং নার্স নিয়মিত আসছেন, সেবা দিচ্ছেন, এতেই সন্তুষ্ট রোগীর স্বামী মো. বাবুল হোসেন।
সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এই ক্রাইসিসের মধ্যে আসা মাত্র ভর্তি করাতে পেরেছি, একটা সিট পেয়েছি, তাতেই আমরা সন্তুষ্ট। ডাক্তার-নার্স সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন চিকিৎসা দিতে। হাসপাতাল, ডাক্তার কারো বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বুধবার (১৪ আগস্ট) পর্যন্ত মুগদা হাসপাতালে মোট ২০২৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করা হয়েছে। এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছেন ৩৬২ জন। এর মধ্যে মেডিসিন ওয়ার্ডে ২৬০ জন, শিশু ওয়ার্ডে ৯৫ জন এবং কেবিনে ১৮ জন।
এ পর্যন্ত মুগদা হাসপাতালে মোট ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী মারা গেছেন। গত চার দিনে কোনো ডেঙ্গু রোগী মারা যাননি। অবশ্য গত দেড় মাসে বেশ কয়েকটা সিরিয়াস রোগী মুগদা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।