মুজিববর্ষে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত দুই খুনিকে ফেরাতে চায় সরকার
১৫ আগস্ট ২০১৯ ১০:৪১
ঢাকা: আগামী মুজিববর্ষের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত দুই খুনিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার। এই দুই আত্মস্বীকৃত খুনির একজন নূর চৌধুরী বর্তমানে কানাডায় পালিয়ে আছেন। অন্যজন রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছেন।
বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ছয় খুনিকে এখনও ফেরত আনতে না পারলেও এই দুই খুনিকে ফেরত আনার ব্যাপারে আশাবাদী সরকারের সংশ্লিষ্টরা। এ জন্য সরকারের তরফ থেকে ওই দুই দেশের সঙ্গে সব ধরনের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। আইন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২০২০-২১ সালকে সরকারি ভাবে মুজিবর্ষ ঘোষণা করা হয়।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ প্রসঙ্গে সারাবাংলা’কে বলেন, আগামী মুজিব বর্ষের মধ্যে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা দুই খুনিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে প্রতিনিয়তই আলোচনা হচ্ছে। সরকারের চেষ্টা যত দ্রুত সম্ভব তাকে ফিরিয়ে এনে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা। অন্যদিকে কানাডায় পালিয়ে থাকা খুনি নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনা আইনিভাবে কিছুটা জটিল বলে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটির আইন অনুযায়ী এভাবে ফেরত পাঠানোর বিধান না থাকায় কূটনৈতিকভাবে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
তবে বঙ্গবন্ধুর অপর চার খুনিকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি সারাবাংলাকে জানান, অপর চার খুনি কোথায় অবস্থান করছে তা এখনও শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে শরিফুল হক ডালিম স্পেনে এবং রিসালদার মোসলেহ উদ্দীন জার্মানিতে পালিয়ে রয়েছেন এমন গুঞ্জন থাকলেও বাকি দুই খুনি আব্দুল মাজেদ এবং আব্দুর রশীদের অবস্থান কোনোভাবে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। গেল কয়েক বছরে নানাভাবে চেষ্টা করেও এই চারজনের সঠিক অবস্থান জানা যায়নি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ধারণা, ফাঁসির দণ্ড থেকে বাঁচতে খুনিরা নিজেদের চেহারা পরিবর্তন করায় তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর উল্টো পথে হাঁটতে থাকে বাংলাদেশ। আত্মস্বীকৃত সেসব খুনীদের বিচার দূরের কথা নানাভাবে তাদের পুরস্কৃত করেছে সে সময়ের সরকার। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৩৪ বছর পর ২০০৯ সালে ১৯ নভেম্বর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়। দুই মাসের ব্যবধানে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে কারাগারে থাকা ৫ জনের ফাঁসি কার্যকর আর একজনের বিদেশে মৃত্যু হলেও বাকি ছয়জন বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছেন।
তবে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই মনে করছেন, টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও পালিয়ে থাকা খুনিদের ফিরিয়ে আনতে না পারাকে ব্যর্থতা মনে করছেন। তারা মনে করছেন, কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করা গেলে অন্তত দুই আত্মস্বীকৃত খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনা যেত।