আর্কটিকে তুষারের সঙ্গে ঝরছে প্লাস্টিক!
১৫ আগস্ট ২০১৯ ১৫:৩৪
সাগরের জলে, মাটির গভীরে অহরহই পাওয়া যাচ্ছে পরিত্যক্ত প্লাস্টিক। এখন বরফের দুনিয়া আর্কটিকেও আকাশ থেকে ঝরে পড়া তুষার কণার সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে প্লাস্টিক। সম্প্রতি করা নতুন এক গবেষণায় তুষারের সঙ্গে প্লাস্টিকের ক্ষুদ্র কণার সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে পরিমাণ প্লাস্টিকের কণা পাওয়া যাচ্ছে তা খুবই আতঙ্কজনক। আর্কটিকের প্রতি লিটার পানিতে প্রায় ১০ হাজারের চেয়েও বেশি ক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণা মিলেছে। এর মানে হচ্ছে সাধারণ বাতাস থেকে আমরা শ্বাস গ্রহণের সময় ‘মাইক্রোপ্লাস্টিক’ ফুসফুসে নিচ্ছি। স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব নিয়ে এখনও কোনো পরিস্কার ধারণা নেই বলেও জানান তারা।
এই অঞ্চলকে এতদিন ‘আদিম পরিবেশ’ বজায় রয়েছে এমন এলাকা হিসেবে বিশ্বে ভাবা হতো।
জার্মান-সুইস বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ‘সাইন্স অ্যাডভান্স’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে বিজ্ঞানীরা কেবল ঝরে পড় তুষারেই নয়, জমে থাকা বরফেও রাবারের কণা এবং আঁশ পেয়েছেন। খবর: বিবিসি।
গবেষকরা আকর্টিকের স্যাভলবার্ড দ্বীপ থেকে প্রাচীন নিয়মেই গবেষণার উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত তুষার সংগ্রহ করেছিলেন। জার্মানির ‘আলফ্রেড ওয়েংগার ইনস্টিটিউট ইন ব্রেমারভেন’ এর গবেষণাগারে পরীক্ষায় ওই তুষারে ধারণার চেয়েও বেশি ‘দূষিত কণা’ পাওয়া যায়।
এসব দূষিত পদার্থের মধ্যে কিছু কিছু খুব ছোট ছোট বলে তারা কিভাবে এখানে এসেছে তা ধারণা করা যায়নি। তবে সেসবের অধিকাংশই কণায় প্রকৃতির জন্য ক্ষতিকর নয়, যেমন গাছের আঁশ এবং প্রাণির পশম ইত্যাদি। তবে আশঙ্কার কথা হচ্ছে এসব উপাদানের সঙ্গে প্লাস্টিকের কণাও পাওয়া গেছে। সেগুলোর মধ্যে টায়ারের উপাদান, বার্নিশ অয়েল, রঙ এবং সম্ভবত সিনথেটিক আঁশও রয়েছে।
গবেষণা দলের প্রধান ড. মেলানি বার্গম্যান বলেন, ‘আমরা কিছুটা দূষণ হয়েছে সেটা আগেই ধারণা করেছিলাম। কিন্তু গবেষণায় অনেক প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে, যা আমাদের জন্য খুবই আতঙ্কের। এটা পরিস্কার যে এসব প্লাস্টিক কণার অধিকাংশ তুষারকণার মধ্য দিয়ে এখানে ঝরে পড়ছে।’
৫ মিলিমিটারের চেয়েও ছোট কণাগুলোকে মাইক্রোপ্লাস্টিক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, বলেও জানান তিনি।
প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে ড. বার্গম্যান বলেন, ‘আমরা জানি না এসব প্লাস্টিক কণা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হবে কিনা; কিন্তু এগুলো দেখাচ্ছে প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের আরও ভালো আচরণ করা উচিত।’
এই গবেষণা দল জার্মানি এবং সুইটজারল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা তুষারও পরীক্ষা করে দেখেছেন। সেখানকার তুষারে আর্কটিকের চেয়েও বেশি দূষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে।