পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত কক্সবাজার, জোরদার রয়েছে নিরাপত্তা
১৫ আগস্ট ২০১৯ ১৭:৪৭
কক্সবাজার: ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হচ্ছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। ছুটির চতুর্থ দিনেও লাখো পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে সমুদ্র সৈকতের বালিয়াড়িতে। সাগরের নীল জলরাশিতে দাপিয়ে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন আগত পর্যটকরা। সমুদ্রপার ছাড়াও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতেও পর্যটকদের কমতি নেই। থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও সেটি উপেক্ষা করেই আনন্দে মেতে উঠেছেন আগত পর্যটকেরা। এদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা পুলিশ, আনসার ও লাইফগার্ড কর্মীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের ছুটি আনন্দময় করে কাটাতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে ভিড় করছেন লাখো পর্যটক। সাগর আর পাহাড়ের মিতালিসহ প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছেন আগত পর্যটকরা। বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে ঈদের পরদিন থেকে সৈকতের সব পয়েন্টে দেখা গেছে পর্যটকদের উপচে পড়া ভীড়। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক, রামুর বৌদ্ধ মন্দিরসহ পর্যটনের জন্য পরিচিত স্থানগুলো মুখরিত ছিল পর্যটকের পদভারে।
কক্সবাজারের বিভিন্ন হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউজ আর কটেজগুলোতে তিন লক্ষাধিক পর্যটক ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে এর ৮০ শতাংশই বুকিং হয়ে গেছে।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার সৈকতে ঘুরতে আসা সাইমা আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে পরিবার নিয়ে এই প্রথম কক্সবাজার বেড়াতে এসেছি। এতোদিন আমি ভাবতাম এখানে শুধু দেখার মতো সমুদ্র সৈকতই রয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই পর্যটন নগরীতে দেখার মত আরও অনেক কিছুই রয়েছে। আমার মন কেড়েছে দরিয়া নগর, হিমছড়ি এবং ইনানীর পাথুরে বীচ।’
কুমিল্লা থেকে বেড়াতে আসা নব দম্পতি নুপূর এবং বাপ্পী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতের নিরাপত্তা দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে তারা বলেন, ‘রাতে সমুদ্র সৈকতের পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা এবং ট্যুরিস্ট পুলিশের টহলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার দেখে আমরা খুবই নিরাপদ বোধ করেছি।’
পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিতের ব্যাপারে পুলিশ সুপার (ট্যুরিস্ট পুলিশ) মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান সারাবাংলাকে জানান, বেড়াতে আসা পর্যটকেরা যেন নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন এবং ভ্রমণ শেষে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারেন, সেই লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে। সী বিচসহ পর্যটন স্পটগুলো সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে ও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি সক্রিয় রয়েছে ইভটিজিং প্রতিরোধ টিম। তাছাড়া আহত বা অসুস্থ পর্যটককে দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত রয়েছে মেডিকেল টিম। একটু পর পর টহল দিচ্ছে বিচ বাইক ও মোটর বাইকের টিম। এছাড়া রয়েছে হেল্প ডেস্ক, যেখানে পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি বিশুদ্ধ খাবার পানি ও প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাছাড়া শুধু ট্যুরিস্ট পুলিশ নয়, বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা প্রদানের জন্য জেলা পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, আনসার, লাইফগার্ডসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও দায়িত্ব পালন করছে।
হয়রানি রোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন উল্লেখ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘পর্যটন নগরীতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের যদি কোনভাবে হয়রানি করা হয়, তাহলে সেই অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যটক সেবা নিশ্চিত করতে সী-বিচ জোনে দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরা। আশা করি পর্যটকদের কোন রকম অসুবিধা হবে না। পর্যটকদের যেনো কোনভাবেই হয়রানির শিকার না হতে হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটকদের ভীড় কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত জোরদার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত