Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

লালবাগে কারখানায় অগ্নিকাণ্ড নিয়ে ভিন্নমত


১৫ আগস্ট ২০১৯ ২১:১৭

ঢাকা: রাজধানীর লালবাগ পোস্তা এলাকায় প্লাস্টিকের খেলনা ও জুতা তৈরির কারখানায় আগুনের সূত্রপাত নিয়ে চুড়িহাট্টার মতো বিদ্যুত বিভাগ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, বুধবার (১৪ আগস্ট) রাত ১০টা ১৫মিনিটের দিকে প্লাস্টিক ও জুতার কারখানার পশ্চিম দক্ষিণ কোণে থাকা ট্রান্সমিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আর বিদ্যুত বিভাগের দাবি, সেখানে থাকা ট্রান্সমিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়নি। এ ধরনের বড় আগুনের ক্ষেত্রে ট্রান্সমিটার বিস্ফোরণ ঘটার কথা। কিন্তু সেখানে কোনো ট্রান্সমিটার বিস্ফোরিত হয়নি। কারখানার ভেতরে থাকা শট সার্কিট থেকেও আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ঘটনাস্থল সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পুরান ঢাকার চকবাজার চুড়িহাট্টার পাশের (১৭৮) ওয়াটার ওয়ার্কস রোড ধরে ইসলামবাগের দিকে যেতে ৬৯/২ পোস্তা এলাকার ওই কারখানাটি আগুনে পুড়ে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

৫ থেকে ৬ কাঠা মাপের টিনশেট ওই কারখানাটির ভেতর এবং বাহির সব পুড়ে গেছে। প্লাস্টিকের আসবাবপত্রগুলো পুড়ে গেছে। কারখানাটির বাইরে তিন কোনায় চারটি বিদ্যুতের ট্রান্সমিটার থাকতে দেখা গেছে। অপর কোনায় আরও একটি বিদ্যুতের ট্রান্সমিটার রয়েছে। সেই ট্রান্সমিটার থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী। তবে দুই ভবনের মাঝখানে সরু গলি ও সেই গলির মাথায় তালা লাগানো থাকায় ওই ট্রান্সমিটার দেখা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাদের সারাবাংলাকে বলেন, ‘আগুনে পুড়ে যাওয়া কারখানাটি মো. বশির মিয়া প্রায় দুইবছর ধরে ভাড়া নিয়ে কারখানা বানিয়েছেন। একদিকে (উত্তর দিকে) প্লাস্টিকের খেলনা, মাঝখানে জুতা ও অন্যদিকে (দক্ষিণ দিকে) ওষুধের কৌটা তৈরি করা হতো। ঈদে কারখানাটি বন্ধ করে বশির মিয়া ফরিদপুরে গ্রামের বাড়িতে গেছেন। গতকাল রাতে কারখানাটিতে আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তা নেভাতে তালা কেটে ভেতরে প্রবেশ করে।’

বিজ্ঞাপন

কাদের বলেন, ‘কারখানার পেছনে থাকা ট্রান্সমিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পুরো এলাকায় এ ধরণের প্লাস্টিক ও জুতা তৈরির কারখানা থাকায় যারা বসবাস করেন তারাও হুমকির মুখে পড়েছে। রাস্তা সরু হওয়ায় লোকজন সহজে বেরও হতে পারেনি। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদেরও আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে।’

আরেক বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘টাকার বিনিময়ে ঘন ঘন ট্রান্সমিটার বসিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।’ অবিলম্বে অতিরিক্ত ট্রান্সমিটার সরানোরও দাবি করেন তিনি।

২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার জাহাঙ্গীর আলম বকুল বলেন, কারখানা বন্ধ থাকায় হয়তো প্রাণহানি এড়ানো গেছে। এখন আমরা চাইব, যাতে কারখানাগুলো অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া যায়। মানুষের জীবনের মুল্য অনেক বেশি। প্লাস্টিকের এসব কারখানা মানুষের জীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের লালবাগ জোনের কমপ্লেইন সুপার ভাইজার আমির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘ট্রান্সমিটার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়নি। ট্রান্সমিটার ও বিদ্যুতের মিটার অক্ষত রয়েছে। স্থানীয়রা কেন অভিযোগ দিচ্ছে তা জানা নেই। এই আগুন কারখানার ভেতরে থেকে সূত্রপাত হয়েছে বলে মনে করি।’

ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান উপপরিচালক (অপারেশন) দীলিপ কুমার ঘোষ বলেন, ‘আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হিসেব করতে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। আমরা সব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করছি।’

এর আগে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে চকবাজার চুড়িহাট্টায় কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার পর স্থানীয়রা বার বার বলে আসছিলেন যে, ট্রান্সমিটার বিস্ফোরণের ফলেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পরে তা মিথ্যে প্রমাণিত হয়। একাধিক তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেয় যে, কেমিক্যাল গোডাউন বিস্ফোরণের ফলেই আগুন লাগে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আগুন কারখানা প্রত্যক্ষদর্শী লালবাগ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর