হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে সন্তুষ্ট হাজিরা
১৭ আগস্ট ২০১৯ ১৭:০৪
ঢাকা: হজ ব্যবস্থাপনায় এবার কোনো সমস্যা নেই। যাওয়ার আগে বাংলাদেশে কিছুটা সমস্যা থাকলেও সৌদিতে পৌঁছানোর পর থাকা, খাওয়া ও যাতায়াতে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়নি। এমনকি জেদ্দা বিমানবন্দরে কোনো ভোগান্তিতেও পড়তে হয়নি বলে জানান মো. আব্দুর রশীদ।
শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফিরতি প্রথম হজ ফ্লাইটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি৮০৮ বিমানযোগে ৩১৫ জন হজযাত্রীর সঙ্গে তিনিও এসছেন।
হজে কোনো ধরনের সমস্যায় পড়েছেন কিনা জানতে চাইলে আব্দুর রশীদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘অন্যান্যবার হাজিরা অনেক সমস্যায় পড়ে। তবে এবার আল্লাহর রহমতে আমরা কোনো সমস্যায় পড়িনি। একদিন সৌদিতে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল। সেদিন ঝড়ও হয়। আমরা তাবুতে ছিলাম। তখন একটু ভয় পেয়েছিলাম। এছাড়া মিনা ও আরাফাতে একদিনে হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার জন্য একটু কষ্ট হয়। তবে কর্তৃপক্ষের কোনো গাফিলতা সেখানে নেই। সৌদি সরকারের আন্তরিকতায় হজ ব্যবস্থাপনায় এবার ভোগান্তি কম হয়েছে।’
কাজী আব্দুল হক। তিনি স্বস্ত্রীক হজ করতে গিয়েছিলেন। হজে গিয়ে কোনো সমস্যায় পড়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমরা কোনো সমস্যায় পড়িনি। তবে অন্যান্য দেশের স্বল্পশিক্ষিতদের যাতায়াত সুবিধার্থে যেখানে মোয়াল্লেম ছিল সেখানে আমাদের দেশের স্বল্পশিক্ষিতদের জন্য কোনো মোয়াল্লেম ছিল না। এই একটি বিষয় এবার আমাদের একটু সমস্যায় ফেলেছিল। তবে বিমানবন্দর থেকে বাসা পর্যন্ত আমরা আর কোনো সমস্যায় পড়িনি।’
খোরশেদ আহমেদ খান। ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে হজে গিয়েছিলেন। এবার হজে সৌদিতে কোনো ভোগান্তিতে পড়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে সারাবাংলাকে বলেন, ‘সমস্যা তেমন কিছুই আমরা পাইনি। অন্যান্য হাজিদের সাথেও কথা বলেছি। আমাদের মতো তারাও কোনো সমস্যায় পড়েনি। ’
শনিবার দুপুর দেড়টায় ৩১৫ জন হজযাত্রী সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি৮০৮ শাহজালালে অবতরণ করে। এরপর শাহজালালে ১ ঘণ্টার মধ্যে ল্যাগেজসহ অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনাল দিয়ে বেরিয়ে আসেন হাজিরা। সেখানে একাধিক হাজির সঙ্গে কথা বললে, তারা এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
এদিকে শনিবার দুপুর থেকে শুরু হয়েছে ফিরতি হজ ফ্লাইট। আর শেষ হবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর। এ বছর বাংলাদেশ বিমান ও সৌদি বিমানযোগের ৩৬৫টি ফ্লাইটে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন বাংলাদেশ থেকে হজে গিয়েছেন। এর মধ্যে হজে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন ৮১ জন হজযাত্রী। যার মধ্যে পুরুষ ৭১ জন ও নারী ১০ জন।
আরও জানা গেছে, এ বছর পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয় ১০ আগস্ট। আর এবার ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত হজ এজেন্সির সংখ্যা ৫৯৮টি। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রীদের নিয়ে প্রথম সৌদিতে ফ্লাইট যায় ৪ জুলাই। আর শেষ ফ্লাইট ছিল ৫ আগস্ট।
অপরদিকে হজপালনের জন্য বাংলাদেশ থেকে যাওয়ার সময় ৬০ হাজার হাজি মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের আওতায় ঢাকায় প্রি-ডিপারচার এরাইভাল সুবিধা পান। আর এই সুবিধায় তাদের লাগেজ নিজ নিজ হোটেলে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু ফিরতি ফ্লাইট মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভের আওতায় না থাকায় হাজিদেরকে লাগেজ নিজ দায়িত্বে বহন করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এবার সৌদিতে ২২ লাখ মুসলিম হজ পালন করেছেন। এছাড়া চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবে বাংলাদেশিদের হজ ব্যবস্থাপনার কাজে সার্বিক তত্ত্বাবধান ও দিক-নির্দেশনা প্রদানের জন্য ১০ সদস্য বিশিষ্ট হজ প্রতিনিধি দল গঠন করে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেই দলে রয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, সিইসি কে এম নূরুল হুদা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী, সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, সদস্য রত্না আহমেদ, ধর্ম সচিব আনিছুর রহমান, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক-৩ মো. আজিজুর রহমান। এদের সবাই বর্তমানে সৌদিতে অবস্থান করছেন।