ডেঙ্গু রোগীর চাপ কমেছে ঢাকা শিশু হাসপাতালে
১৭ আগস্ট ২০১৯ ১৯:০৬
ঢাকা: ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর রক্তের প্লেটলেট অস্বাভাবিক মাত্রায় কমে গিয়েছিল। বর্তমানে প্লেটলেট বেড়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলেও হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ায় সন্তানকে নিয়ে বাসায় ফিরতে পারছেন না আসফির মা-বাবা। ফলে তাদের থাকতে হচ্ছে হাসপাতালেই। এর আগে বরিশাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত এক বছর বয়সের শিশু আসফিকে নিয়ে ঢাকায় আসেন তার বাবা-মা। এর পর তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা শিশু হাসপাতালে।
আসফির মা সারাবাংলাকে বলেন, ‘ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আসফিকে প্রথমে বরিশাল মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। অবস্থা বেগতিক হলে সেখান থেকে শিশু হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। ওই সময় থেকেই এখানে চিকিৎসা চলছে তার। ’
রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা আয়শা সিদ্দিকা জানান, তার ছয় মাস বয়সী মেয়ে সোয়াত জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিল। প্রথম দিকে সাধারণ জ্বর মনে হলেও পরে পরীক্ষা করে দেখা যায় ডেঙ্গু পজেটিভ। এর পরই মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সোয়াত এখন অনেকটাই সুস্থ।
সদরঘাট থেকে আসা আছমা বেগম জানান, তার আড়াই বছরের মেয়ে রুমানা আক্তারের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। কিন্তু সময় মত শিশু হাসপাতালে ভর্তি করায় এখন অনেক ভাল আছে। বাড্ডা থেকে আসা শিশু মানহার মা হাসনা বেগমের মন্তব্যও একই রকম।
শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে ঢাকা শিশু হাসপাতাল ঘুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, সার্বিকভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চাপ কমেছে।
এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়েছে ৮৬৩ জন। এছাড়া বর্তমান ভর্তি ১২৬ জনের মধ্যে তিনজন আইসিইউতে এবং ছয়জন সিসিঅ্যান্ডডিতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের অবস্থা কিছুটা জটিল। এছাড়া এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১১ জন।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ও সহকারী অধ্যাপক ডা. রিজওয়ানুল আহসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘মে মাস থেকে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছে। জুন-জুলাইয়ের মাঝামাঝি ডেঙ্গুর চাপ বেড়েছিল। ওই দুই মাসের প্রতিদিন ভর্তির চাপ ছিল ৬০ থেকে ৭০ জন পর্যন্ত। সেটা আগস্টে সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এখন গড়ে ২০ থেকে ২৫ জনের মত ডেঙ্গু রোগী আসছে। এছাড়া বর্তমানে আমাদের এখানে ১২৬ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। ‘
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালের সাথে সমন্বয় করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ডেঙ্গু সেল টিম গঠন করা হয়েছে। এই টিমের তত্ত্বাবধানে আমাদের এখানে একটা ওয়ান স্টোপস সার্ভিস সেন্টার চালু করেছি। যেকোনো জ্বরের বাচ্চা আসলে সেখানে অ্যাটেন্ট করা হচ্ছে। ডেঙ্গু সেল রুমে আমাদের কন্সালটেন্ট রয়েছেন। তারা ভিজিট করছেন এবং আমরা এনএস-ওয়ান পরীক্ষাটা ফ্রি করাচ্ছি। প্রতিদিন এখানে ১০০ থেকে ১৫০ টা শিশুর এনএস-ওয়ান পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে গড়ে ১০টা শিশুর ডেঙ্গু পজেটিভ আসছে। ’
আরও পড়ুন: কমছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা, ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি ১৪৬০ জন