Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারত ও চীনকে দেওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলের শর্তাবলি প্রকাশের দাবি


১৯ আগস্ট ২০১৯ ১৮:৫৭

ঢাকা: ভারত, চীন ও জাপানকে বাংলাদেশে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সুযোগের শর্তাবলি জনসম্মুখে প্রকাশের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সোমবার (১৯ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, সম্প্রতি ভারত, চীন ও জাপানকে বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এর যৌক্তিকতা ও সময়োপযোগিতা বিতর্কের ঊর্ধ্বে। কিন্তু এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার শর্ত কী; এতে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদে রাষ্ট্রের কতখানি লাভ হবে; এ ধরনের উদ্যোগের ঝুঁকি কী; সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে কী ধরনের শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করা যাবে এবং তার যথাযথ পরিবেশগত সমীক্ষার শর্ত কী আছে; মুনাফার বণ্টন কীভাবে হবে?— এ বিষয়গুলো স্পষ্ট নয়।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিশেষ করে যেসব এলাকায় এই অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেখানকার স্থানিক প্রভাব যাচাই করা হয়েছে কি না, কিংবা হয়ে থাকলেও তাতে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা কতখানি বা এর ফলে তাদের জীবন-জীবিকার ওপর কী প্রভাব পড়বে— এসব বিষয়ও স্পষ্ট নয়। এসব বিষয়ের পর্যাপ্ত বিশ্লেষণ ছাড়া অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার চুক্তিতে আমরা উদ্বিগ্ন।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন এ কারণে যে আমাদের দেশে ভূমিসম্পদ নির্দ্বিধায় অন্যতম দুষ্প্রাপ্য সম্পদ। এমন একটি দেশে একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে খরা বেড়ে যাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ততা বেড়ে কৃষিযোগ্য জমি কমছে, অন্যদিকে উল্লিখিত বিষয়গুলোর বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণ না করেই কৃষি ও পতিত জমি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদে এই উদ্যোগ রাষ্ট্রের জন্য কতটা লাভজনক বা এই সম্পদের বিকল্প ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে কি না, তা নির্ধারণে যথাযথ সমীক্ষা এবং এসব অঞ্চলে কী ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হবে, সেটিও স্পষ্ট নয়। তাই আমরা এসব তথ্য প্রকাশ করার দাবি করছি।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিশেষ করে স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকির বিশ্লেষণমূলক সমীক্ষা ছাড়াই এসব চুক্তি হয়ে থাকলে তা অবিলম্বে স্থগিত করা হোক। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট খাতের বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে যথাযথ পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও স্থানিক প্রভাব সমীক্ষার ওপর নির্ভর করে অগ্রসর হওয়ার জন্য জোর দাবি জানাই।

তিনি আরও বলেন, জাপানের ক্ষেত্রে মোটা দাগে বাংলাদেশের প্রাপ্য অংশ নির্ধারিত হলেও এখনো চীন ও ভারতের জন্য বরাদ্দ করা অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের কোনো প্রকার রূপরেখা নির্ধারিত হয়নি।

ড. জামান আরও বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, মিরসরাইয়ে ভারতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলটি উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতেরই ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপকে, যারা এরই মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে পরিবেশ বিধ্বংসী কয়লা খনি প্রকল্প নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচিত। এ ধরনের বিতর্কিত প্রতিষ্ঠানকে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ কতটুকু বিবেচিত হয়েছে, তা জানার অধিকার জনগণের রয়েছে। একইভাবে পাশের শ্রীলংকাসহ বিভিন্ন দেশে চীনের আগ্রাসী বিনিয়োগ কৌশলের নেতিবাচক প্রভাবের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় না নিয়ে চীনের মতো দেশের সঙ্গে এ ধরনের উদ্যোগ অপরিণামদর্শী হবে বলেও আমরা মনে করি।

অর্থনৈতিক অঞ্চল টপ নিউজ টিআইবি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর