সন্তান হত্যার দায় থেকে রেহাই পেলেন যে নারী
২০ আগস্ট ২০১৯ ১১:২৯
মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদরে গর্ভপাত নিয়ে রয়েছে কঠোর আইন। যেকোনো পরিস্থিতিতে গর্ভপাতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এভেলিন হার্নান্দেজ নামে এক নারীকে গর্ভপাত ও সন্তান হত্যার অভিযোগে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল দেশটিতে। তবে মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সুপ্রিমকোর্ট তাকে নির্দোষ ঘোষণা করে। এই রায়কে যুগান্তকারী হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে ইতোমধ্যেই ৩৩ মাস তাকে থাকতে হয়েছে জেলে। খবর বিবিসির।
২০১৭ সালের জুলাই মাসের ঘটনা। এভেলিন হার্নান্দেজের বয়স তখন ১৮। একদিন তাকে টয়লেট থেকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করেন তার মা। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই পুলিশি ঝামেলার মধ্যে পড়তে হয় তাকে। টয়লেট থেকে একটা বাচ্চার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গর্ভপাতের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এভেলিনকে।
জেরার এক পর্যায়ে এভেলিন স্বীকার করেন তাকে স্থানীয় গ্যাংয়ের এক মাস্তান ধর্ষণ করে। তার পেটে ব্যথা অনুভব করলেও বুঝতে পারেননি তিনি গর্ভধারণ করেছেন। এবং সন্তান প্রসব করার আগেই তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। সন্তানের মৃত্যুর বিষয়ে তার কিছু করার ছিল না।
তবে আদালতে সরকারের কৌঁসুলিরা তা মানতে রাজি হননি। ধর্ষণের বিষয়টি কেন গোপন করা হলো তারা প্রশ্ন তোলেন। এদিকে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে ডাক্তাররাও নিশ্চিত করতে পারেননি গর্ভে থাকা অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে নাকি জন্মের পরে।
রায়ে এভেলিনের ৩০ বছরের সাজা হয়। এভেলিন তবু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেছিলেন, তিনি মাস্তানদের ভয়ে ছিলেন। তাই ধর্ষণের বিষয় গোপন রেখেছিলেন। শিশুর অস্তিত্ব নিশ্চিত হলে গর্বের সহিত তাকে গ্রহণ করতেন।
পরবর্তীতে এভেলিনের আইনজীবীরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আদালত মামলাটি পুনরায় পর্যবেক্ষণ করে আগের রায় বাতিল করে বলেন, এভেলিনকে শাস্তি দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এভেলিনের আইনজীবীরা এই রায়ে স্বস্তি জানিয়েছেন। জীবন থেকে প্রায় ৩ বছর চলে গেলেও তিনি আবার নতুন করে শুরু করতে চান। গ্রহণ করতে চান উচ্চশিক্ষা। এদিকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, গর্ভপাত নিয়ে আরও যেসব মামলা নারীদের বিরুদ্ধে জারি করা আছে সেগুলোও যাচাই করে দেখা উচিত।