‘তদন্তের ক্ষেত্রে দুদকের সক্ষমতা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি’
২১ আগস্ট ২০১৯ ২০:০৫
ঢাকা: তদন্তের ক্ষেত্রে দুদকের সক্ষমতা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
বুধবার (২১ আগস্ট) কমিশনে জাতিসংঘ উন্নয়ন তহবিলের (ইউএনডিপি) প্রতিনিধি ফিলিয়াট ম্যাটসেজার নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করার জন্য ইউএনডিপির প্রতি আহ্বান জানান।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘তদন্তের ক্ষেত্রে কমিশনের সক্ষমতা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় পৌঁছায়নি। সক্ষমতা বাড়াতে গত তিন বছরে প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ইউএনডিপিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা টেকনিক্যাল সহযোগিতার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া দুদক দুর্নীতি দমন, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের সব কার্যক্রম সমান গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করছে।’
ইকবাল মাহমুদ আরও বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিক মূল্যবোধে জাগ্রত করার লক্ষ্যে দেশের স্কুল, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৮ হাজার ‘সততা সংঘ’ গঠন। ’
সততা সংঘের প্রতিটি কমিটিকে বছরে ৪ হাজার ২০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সততা সংঘের সদস্যরা এই সামান্য অর্থ দিয়ে বছরব্যাপী দুর্নীতি প্রতিরোধ ও উত্তম চর্চার বিকাশে বিতর্ক ও রচনা প্রতিযোগিতা এবং নাটকসহ বিভিন্ন সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি সেবাপ্রদানের প্রক্রিয়াকে পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে ঘুষ, দুর্নীতি, দীর্ঘসূত্রিতা এবং জনহয়রানি বন্ধের লক্ষ্যে কমিশন ২৮টি প্রাতিষ্ঠানিক দল গঠন করেছে। এসব দল সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ/অপচয়ের দিকসমূহ পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করছে। এরপর জনসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানের সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণসমূহ চিহ্নিত করে তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ প্রতিবেদন আকারে সরকারের কাছে পেশ করছে। এছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশন বিজনেস প্রসেস রিইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করছে।’
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বিকাশের প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি। তাত্ত্বিকভাবে অনেকে বলেন, অর্থনৈতিক বিকাশের সাথে সাথে দুর্নীতিও বিকশিত হয়। কমিশন এই দুর্নীতিকেই নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূলে নিরলসভাবে কাজ করছে। বর্তমানে কমিশনের প্রায় ৭০ ভাগ মামলায় অপরাধীদের শাস্তি হচ্ছে। দুদক শতভাগ মামলায় শাস্তি প্রত্যাশা করে। ’
এদিকে ফিলিয়াট ম্যাটসেজা দুদকের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, ‘দুর্নীতি বৈশ্বিক সমস্যা। এই সমস্যা সমাধানে দুদককে ইউএনডিপি সহযোগিতা করতে চায়।’