Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বস্তিতে আগুন লাগে না, লাগানো হয়’


২২ আগস্ট ২০১৯ ১৭:৩১

ঢাকা: ‘বস্তিতে আগুন লাগা এটি পরিষ্কার ষড়যন্ত্র। সেখানে আগুন লাগে না, আগুন লাগানো হয়। দায়িত্ব নিয়েই বলছি সরকারের পৃষ্টপোষকতায় সুবিধাভোগী লোকজনই এই আগুন লাগিয়ে থাকে।’

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য।

‘বস্তিতে ঘন ঘন আগুন ও আবাসন সংকটে স্থায়ী সমাধান’ বিষয়ে আলোচনা সভায় পঙ্কজ ভট্টাচার্য আরও বলেন, বস্তিগুলোতে একটা সিন্ডিকেট কাজ করে থাকে। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকেন তখন সেই সরকারের সুবিধাভোগীরা বস্তি চালায়। মাদক বেচাকেনা করে। কিশোর কিশোরীদের দিয়ে নানা ধরণের খারাপ কাজ করায়।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, প্রত্যেকটি আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় কিন্তু সেই কমিটির প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না।
রাজধানীর রূপনগরে ঝিলপাড় বস্তিতে জামায়াত-শিবির চক্র গান পাউডার ছিটিয়ে দিয়ে আগুন লাগিয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন: সব পুড়ে ছাই, আশ্রয় স্কুলঘরে

অনুষ্ঠানের অনান্য বক্তারা বলেন, রূপনগরের বস্তিতেও তারা এরকম কোনো ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা তা তদন্ত কমিটিকে বের করার অনুরোধ করছি। বরাবরেই যারা আগুন লাগায় তাদের বিচার হয় না। বস্তিবাসী বারবার নিঃস্ব হয়ে যায়, বাস্তুহারা হয়ে পড়ে।

বক্তারা বলেন, বস্তিবাসীদের জন্য বিনা সুদে ২০ বছর মেয়াদী কিস্তিতে ছোট বাসা করে দিতে হবে। তারা মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করবেন। রাজউক প্লান করবে আর গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করবে। বস্তিবাসীদের ফ্ল্যাল্ট দেওয়া এবং তা রক্ষণাবেক্ষনের জন্য একটি স্থায়ী কমিশন গঠনের প্রস্তাব করছি।যারা গ্যাস বিদ্যুতের ভাড়া তুলে সরকারের কোষাগারে না দিয়ে পকেটে ভরায় তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় দাবিও জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

পবার সভাপতি আবু নাসের মাহমুদ বলেন, রাজউক শুধু ফ্ল্যাট বিক্রি করে উচ্চবিত্তদের জন্য। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রাজউক কোনো কাজ করে না। তাদের ৫ শ থেকে ৬ শ স্কয়ার ফিটের বাসার ব্যবস্থা করতে হবে। কেন বারবার বস্তিতেই আগুন লাগে। হাইকোর্টের রায় আছে আবাসন ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত বস্তি উচ্ছেদ করা যাবে না। এজন্য পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়ে জায়গা খালি করা হয়। যাতে কাউকে ধরা না যায়। সে কারণে বস্তিতেই বারবার আগুন লাগে। প্রত্যেকবার আগুন লাগে আর বস্তির অসহায় মানুষগুলোই বারবার নিঃস্ব হয়ে পড়ে।

আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দেবাষীশ কুন্ডু বলেন, বস্তিবাসীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা দরকার। শহর টেকাতে হলে বস্তিবাসীর দরকার আছে। না হলে শহর অচল হয়ে যাবে। বাসা বাড়িতে কে কাজ করবে, অফিস আদালতে পরিস্কার করবে কে, রাস্তা পরিস্কার করবে কে, হাট বাজারে কারা জিনিসপত্র বিক্রি করে, আপনার আমার গাড়ি চালাবে কে? সব মিলিয়ে বস্তিবাসীর দরকার রয়েছে। রাজউক বড়লোকদের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। যতদিন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য কাজে আসবে না ততদিন কোনো লাভ হবে না। বস্তিগুলো এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে যাতে সহজে পুড়ে না যায়। এজন্য বিভিন্ন সংস্থার পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান বলেন, বস্তিগুলোতে বৈধভাবে গ্যাস বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ দিতে হবে। তাহলেই অবৈধ সুবিধাভোগীরা সুযোগ নিতে পারবেন না। বস্তিগুলো উন্নত করতে হবে। সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে। এলাকা ভিত্তিক বস্তিবাসীদের আবাসন সুবিধা দিতে হবে। নাহলে অনেক দুর থেকে এসে কাজ করতে হবে বস্তিবাসীদের।

বিজ্ঞাপন

আগুন ঝিলপাড় বস্তি পবা বস্তি রূপপুর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর