আকাশ এত মেঘলা…
২৩ আগস্ট ২০১৯ ১১:১৫
চারদিক অন্ধকার করা মেঘ ছিল ঢাকার গতকালের আকাশে। বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন অংশে থেমে থেমে বৃষ্টিও হয়েছে। এরপর রাত থেকেই পরিবেশ শুষ্ক, যদিও আকাশে ধূসর মেঘের আনাগোনা কমেনি। শুক্রবার সকালের আকাশেও তেমন একটা পরিবর্তন আসেনি। কিছু কিছু ধূসর মেঘ এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে ঢাকার আকাশে। আজকের এই ছুটির দিনের সকালের আকাশটা দেখে তাই ‘মন খারাপের সকাল’ মনে করলে ভুল হবে না। আবহাওয়া অফিস বলছে, মেঘের ভেলা সত্ত্বেও সকালটা শুষ্ক কাটলেও বেলা গড়ালে ‘মন খারাপের বিকেল-সন্ধ্যা’ পেতে পারে বৃষ্টির দেখাও।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানাচ্ছে, আরও ১২ ঘণ্টার মতো শুষ্ক থাকতে পারে ঢাকার প্রতিবেশ। এরপরই হয়তো ঝুপ করে নেমে আসতে পারে একপশলা বৃষ্টি।
আবওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, বর্ষা ঋতু শেষ হয়ে গেলেও প্রকৃতিতে এখনো মৌসুমী বায়ুর প্রভাব রয়ে গেছে। ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টি হচ্ছে নিয়মিত। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ একই রকম থাকবে।
টুকটাক এই বৃষ্টির পর অবশ্য ঝলমলে আলোয় ভরবে আকাশ। আব্দুর রহমান বলছেন, ‘ধীরে ধীরে শরতের চরিত্র প্রকাশ পেতে থাকবে। শাদা শুভ্র মেঘেরা ভিড় বাড়িয়ে কমিয়ে দেবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ।’ ‘নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা’র দেখা পেতে তাই সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্তই হয়তো অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে, শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্ভাবাসে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর প্রদেশ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত একটি লঘুচাপ মৌসুমী বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ রয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগরেও। মৌসুমী বায়ু তাই বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে সেটি মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে।
এই মৌসুমী বায়ুর প্রভাবেই রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
অন্যদিকে, আকাশে ধূসর-কালো মেঘের ঘনঘটা আর হুটহাট দুয়েক পশলা বৃষ্টির দেখা মিললেও ঢাকা, সিলেট, রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলসহ রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সুখবর হলো, মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সেই তাপপ্রবাহ প্রশমিত হতে পারে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুরে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ২৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীর বদলগাছী এলাকায়। ঢাকা শহরে ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এদিন। সামান্য এই বৃষ্টিপাত ঠেকাতে পারেনি তাপমাত্রার স্কেলকে, তা পৌঁছে গেছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। পরে পরিবেশ শুষ্ক হয়ে এলে তা ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও নেমে যায়। রাজধানীতে আজকের এই ছুটির দিনেও একই রকম তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, পশ্চিম বাংলা প্রদেশের আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আগামীকাল শনিবার থেকে রোববার পর্যন্ত গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতেও রোববার ভারী বৃষ্টি হতে পারে। কারণ হিসেবে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের লাগোয়া অঞ্চলের আকাশের নিম্নচাপের কথা উল্লেখ করেছে তারা।
পশ্চিমবাংলার আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছে, পশ্চিমবাংলা লাগোয়া ভারতের আকাশে একটি ঘূর্ণাবর্তও তৈরি হয়েছে। আরও একটি নিম্নচাপ উত্তরপ্রদেশ থেকে দক্ষিণে গিয়ে তামিলনাড়ু পর্যন্ত বিস্তৃত। এর ফলে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ের পূর্বাভাসও রয়েছে৷