চট্টগ্রামে তরুণ খুনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ২
২৭ আগস্ট ২০১৯ ১৯:২১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ছুরিকাঘাতে জাকির হোসেন জনি খুনের ঘটনায় তার বোন বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ‘পূর্ব শত্রুতার’ জেরে তাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই তরুণকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জনির বড় বোন মাহমুদা আক্তার ইন্নি বাদি হয়ে নগরীর খুলশী থানায় মামলা দায়ের করেন।
দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় করা এ মামলার আসামিরা হলেন- সৌরভ ঘোষ (২০), সৈয়দ সাফাত কায়সার (১৯), রবিউল (১৯), তূষার (২২), আনিসুর রহমান (৩০), আয়াতুল হক (২০) ও মো. মামুন (৩০)। এছাড়া আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রনব চৌধুরী।
ওসি প্রনব চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলা দায়েরের আগেই আমরা সন্দেহভাজন হিসেবে সৌরভ ও কায়সারকে গ্রেফতার করেছি। মামলা দায়েরের পর তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাদি পূর্ব শত্রুতার বিষয় উল্লেখ করেছেন। আমরা এই অভিযোগ নিবিড়ভাবে তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেব।’
সোমবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে নগরীর খুলশী থানার জাকির হোসেন সড়কে ওমরগণি এমইএস কলেজের মূল ফটকের অদূরে ইক্যুইটি ভবনের সামনে খুন হন জাকির।
হত্যাকাণ্ডের শিকার জাকির হোসেন জনি (১৮) সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার কলাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে। চার ভাই, দুই বোনের মধ্যে জনি সবার ছোট ছিলেন। তারা ঢাকার মিরপুরে থাকেন।
জনির বড় বোন সিআইডি’র চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীনের স্ত্রী। থাকেন চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কে। জনির আরেক বোন মাহমুদা আক্তার ইন্নি পরিবার নিয়ে থাকেন ময়মনসিংহে।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, জনি চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী আবাসিক এলাকার এক নম্বর সড়কে কুতুব উদ্দীনের বাসায় থেকে পড়ালেখা করত। গতবছর তাকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার মিরপুরে নিয়ে একটি স্কুলের নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। এবছর জনি ওই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ছিল।
ঈদুল আযহা উপলক্ষে মাহমুদা ও তার স্বামী, জনি ও তার মা চট্টগ্রামে কুতুব উদ্দীনের বাসায় বেড়াতে এসেছিলেন। সোমবার রাতে তাদের ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। চট্টগ্রামে পড়ালেখা করার সময় এমইএস কলেজের আশপাশের এলাকায় জনির বেশ কয়েকজন বন্ধু ছিল। ঢাকায় ফেরার আগে সোমবার দুপুরে তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল জনি।
হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ জানিয়েছিল, রোববার (২৫ আগস্ট) এমইএস কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের দুইগ্রুপে মারামারি হয়েছিল। এর জের ধরে সোমবার হত্যাকাণ্ড ঘটে। তবে জনির মা প্রেম সংক্রান্ত বিরোধে জনিকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
জনিকে নিজেদের গ্রুপের কর্মী বলে দাবি করেছেন এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি ওয়াসিম উদ্দিনের অনুসারীরা। হত্যাকাণ্ডের জন্য তারা ওয়াসিম গ্রুপের প্রতিপক্ষ কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস আরশাদুল আলম বাচ্চুর অনুসারীদের দায়ী করেছেন।