গণতান্ত্রিক অধিকারের নাম মগের মুল্লুক নাকি: মির্জা ফখরুলকে হানিফ
২৮ আগস্ট ২০১৯ ০২:০০
ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, গণতন্ত্রের মানে কি, আগুন দিয়ে পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা? এটা কি গণতান্ত্রিক অধিকার? এটা মগের মল্লুক পেয়েছেন? যে মগের মুল্লুক ওনার প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কায়েম করেছিল।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় হানিফ এ সব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, ‘আজকে বিএনপি নির্যাতনের কথা বলেন। এই খুনি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গেই শুধু জড়িত ছিলেন না। ১২’শ মুক্তিযোদ্ধা সামরিক অফিসারকে বিনা বিচারে ফাঁসি দিয়েছেন। হাজার হাজার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পুড়েছেন। বহু নেতাকর্মীকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল, তার কোনো ইয়ত্তা ছিল না।’
হানিফ আরও বলেন, ‘এখন সবাই সাধু সাজে। আগুন দিয়ে পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করবেন? সেই জন্য মামলা হলে ওনার ব্যথা লাগে। মানুষ পুড়িয়ে মারবেন, তা অপরাধ না? অপরাধ হলো ওনার বিরুদ্ধে মামলা কেন করা হলো? বিএনপির ভাবখানা এ রকম, আমরা গণতন্ত্র চাই, আপনি গণতন্ত্র দেবেন না?’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্রের মানে কি? গণতন্ত্রের মানে কি, আগুন দিয়ে পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা? এটি তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার? এটি মগের মুল্লুক পেয়েছেন? যে মগের মুল্লুক কায়েম করেছিল বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে। ওনার প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং এরপরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে মানবতাবিরোধী তাণ্ডব চালিয়ে তারা মগের মুল্লুক কায়েম করেছিল।’
জিয়াউর রহমান একাত্তরে যারা গণহত্যা করেছিল বলে অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে ছিল তাদের মুক্ত করে দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ গণহত্যার স্বীকৃতি অর্জন থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলেও দাবি করেন হানিফ।
জিয়াউর রহমান তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছিলেন দাবি করে হানিফ বলেন, ‘সে হিসেবে বলা যায়, তিনি কখনও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন না। তার মূল লক্ষ্য ছিল, এই বাংলাদেশকে পাকিস্তানের একটা ফেডারেল স্ট্রেট তৈরি করা।’
তার ধ্যান ধারণা চিন্তা চেতনা সব কিছু ছিল পাকিস্তানকেন্দ্রিক এবং তার স্ত্রী পুত্র তারাও একই বলেও দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান প্রেমে শুধু জিয়াউর রহমানই মশগুল ছিল না, ওনার চেয়ে ওনার স্ত্রী আবার আরেক ধাপ ওপরে ছিল।’
মুক্তিযুদ্ধচলাকালীন সময়ে জিয়াউর রহমানকে লেখা পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা কর্নেল আসলাম বেগের চিঠির কথা তুলে ধরে হানিফ বলেন, ‘১৯৭১ সালে কোন কামে (কর্মে) জিয়াউর রহমান ব্যস্ত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় সে পাকিস্তানের এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন, সেটা আজকে প্রমাণিত।’
১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিফ নেওয়াজ মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শোক বার্তা পাঠানোর জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ারও সমালোচনা করে হানিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান মারা গেছে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর শোকবার্তা পাঠিয়েছে কী কারণে? পাকিস্তান প্রেম কত গভীর ছিল বোঝা যায়?’
শ্রমিক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সামসুল আলম বকুলের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কর মাহামুদ, কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ অনেকে। সভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক আহ্সান হাবীব মোল্লা।