জিয়ার মরণোত্তর বিচার হলেই বিভেদ দূর হবে: হানিফ
২৯ আগস্ট ২০১৯ ১৮:৫৬
ঢাকা: ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মূল চক্রান্তকারী বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার হলেই জাতির মধ্যে যে বিভক্তি আছে তা দূর হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তিকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করে জিয়া বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করে গেছেন।’
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় মাহবুব উল আলম হানিফ এ সব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চক্রান্তে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। এ হত্যাকাণ্ডের মূল চক্রান্তকারী হিসেবে ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। যিনি বাঙালি জাতিকে দুভাগে বিভক্ত করেছেন। একদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, আরেকদিকে পাকিস্তানপন্থি বিএনপি-জামায়াত অপশক্তি। সেই জিয়াউর রহমানের বিচার না হওয়া পর্যন্ত, তার মুখোশ উন্মোচিত না হওয়া পর্যন্ত জাতির বিভক্তি দূর হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি না। সে কারণে আমার দাবি থাকবে, বঙ্গবন্ধু হত্যার চক্রান্তকারী হিসেবে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের মাধ্যমে জাতির সামনে বিএনপি-জামাতের চক্রান্তকারীদের মুখোশ উন্মোচিত করা হোক।’
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপির ঐক্যের ডাকের কঠোর সমালোচনা করে হানিফ বলেছেন, ‘আমরা বলতে চাই, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। স্বাধীনতাবিরোধী পাকিস্তানি শক্তির সঙ্গে ঐক্যের কোনো প্রয়োজন নেই।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের মুখে জাতি ঐক্যের কথা শুনতে চায় না। আপনারা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশের সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন।’
হানিফ বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে মির্জা ফখরুলরা বৈঠক করেছেন।’ বৈঠকে ফখরুল বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন’, খুবই ভালো কথা বলেছেন। আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, রোহিঙ্গা ইস্যু জাতীয় সমস্যা এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আপনারা, আপনাদের নেতা জিয়াউর রহমান এদেশের রাজাকার-আলবদর-আল শামসদের রাজনীতি করার সুযোগ দিয়ে জাতির মধ্যে একটা সুস্পষ্ট বিভেদ তৈরি করেছে।”
তিনি বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের সমাজ দুভাগে বিভক্ত। একদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। অপরদিকে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের প্ল্যাটফর্ম জামায়াত-বিএনপি তৈরি করে দিয়ে গেছেন জিয়াউর রহমান।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বাংলাদেশের সব কিছু সমাধান করার সক্ষমতা শেখ হাসিনার সরকারের রয়েছে। দেশকে যদি ভালোবাসেন, একটি অনুরোধ করব মির্জা ফখরুল সাহেব- আপনাদের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং কথাবার্তা বন্ধ করুন। তাহলে দেখবেন সকল সমস্যার সমাধান দ্রুত হবে। আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানসহ সকল সমস্যার সমাধান হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সকল সমস্যার সমাধান হবে। দয়া করে আপনারা উস্কানিটা বন্ধ রাখুন।’
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ-কমিটির সভাপতি খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, কবি নির্মলেন্দু গুণ, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিক, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।