রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ সঠিক পথে হাঁটছে: তথ্যমন্ত্রী
৩০ আগস্ট ২০১৯ ১৮:২২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ সঠিক পথে হাঁটছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ। শুক্রবার (৩০ আগস্ট) সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজ ১১ লাখ রোহিঙ্গার জন্য আমরা হিমশিম খাচ্ছি, অথচ বঙ্গবন্ধু তিন কোটি মানুষকে পুনর্বাসন করেছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ যে পথে হাঁটছে সেটিই সঠিক পথ। কোন যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করা যাবে না। বাংলাদেশ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করবে।’
‘কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা (বিএনপি মহাসচিব) যেভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে রাজনীতি করা শুরু করেছেন, তাদের কথাবর্তায় মনে হচ্ছে, রোহিঙ্গারা দেশে ফিরে যাক এটি তাদের উদ্দেশ্য নয়। বরং রোহিঙ্গাদের নিয়ে রাজনীতি করায় তাদের মূল উদ্দেশ্যে’, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ছয় দফার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মানুষের মনন তৈরি করেছেন স্বাধীনতার জন্য। তিনি জানতেন কখন স্বাধীনতার ডাক দিতে হবে। তিনি ৬৬, ৬৯, ৭০ সালে স্বাধীনতার ডাক দেননি। ৭১ সালের মার্চ মাসে গিয়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন। এমনকি ৭ মার্চ তিনি রাষ্ট্র স্বাধীন সেটা ঘোষণা করেননি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘৭ মার্চ স্বাধীনতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বাঙালিকে সময় দিয়েছিলেন, নিরস্ত্র জাতিকে স্বশস্ত্র জাতি হতে। যার যা কিছু আছে তা নিয়ে প্রস্তুত থেকো, শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। অর্থাৎ নিরস্ত্র জাতি যারা আন্দোলন করছিলেন তাদের স্বশস্ত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ড নিছক বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নয়। রাষ্ট্রকে হত্যার উদ্দেশেই এটি পরিচালনা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় একটি বিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করেছেন। ১৯৭১ সালে সাত কোটি মানুষের মধ্যে এক কোটি মানুষ ভারতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। দুই কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে গৃহহারা। অর্থাৎ সাত কোটি মানুষের মধ্যে তিন কোটি মানুষ গৃহহারা। সেই এক কোটি মানুষকে বাংলাদেশে ফেরত এনেছিলেন। তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছিলেন। দুই কোটি মানুষ যারা গৃহহারা তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বাসস্থান দিয়েছিলেন।’
১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় তখন দেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭.৪ শতাংশ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘পরিপূর্ণ ধ্বংসস্তুপের মধ্য থেকে রাষ্ট্র বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দাঁড়িয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। তখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়।’ বঙ্গবন্ধুর আমলের প্রবৃদ্ধির রেকর্ড অর্জন করতে ৪৩ বছর সময় লেগেছে বলেও মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী।
নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনের মাল্টিপারপাস শেডে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন- সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার আমেনা বেগম ও উপ-কমিশনার (সদর) শ্যামল কুমার নাথ।